Search box..

নিয়ে নিন চমৎকার একটা ভৌতিক গল্প [শেষ অংশ]

নিয়ে নিন চমৎকার একটা ভৌতিক গল্প [শেষ অংশ]


নিয়ে নিন চমৎকার একটা ভৌতিক গল্প [শেষ অংশ]

Posted:

Hello what’s up guys কেমন আছেন সবাই ? আশা করি ভালো আছেন । সবাইকে স্বাগতম আজকের একটি নতুন পোস্টে । টাইটেল আর thumbnail দেখে already বুঝে গেছেন আজকের টপিক কি । আশা করি পোস্টটি শেষ পর্যন্ত দেখবেন । তো বেশি কথা না বলে আজকের পোষ্ট শুরু করা যাক তো যারা আগের পার্ট পরেননি তারা এই লিংক এ গিয়ে পরে আসুন ।
এবার আগের পার্ট এর পর ,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

এক মূহুর্ত দেরি না করে সঠান হাঁটতে লাগলাম।সিড়ি ভেঙ্গে নিচে
নামার সময়ও কেন যেন মনে হচ্ছিলো আঁড়ালে থেকে
কেউ আমার দিকে দৃষ্টি রাখছে।
সে চোখের দৃষ্টি বড্ড প্রখর।
দ্রুত নিচে নেমে জানালা দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।বাহিরে বের
হওয়ার পর পরই ঠান্ডা বাতাসে শরীরে অন্যরকম একটা প্রশান্তি
অনুভব হলো। মনে হচ্ছে এতক্ষণ পৃথিবী থেকে অনেক
দূরে একটা ভিন্নস্থানে চলে অবস্থান করছিলাম,যেখানে প্রাণ
খুলে শ্বাস নেওয়াটাই বড্ড কষ্টের। একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে বাগান
পেরিয়ে প্রাচীরের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। এ বাড়িতে
কিছু তো একটা গন্ডগোল আছে।
তবে কি সেটা? আর সেটাই আমাকে খুঁজে বার করতে হবে।
প্রাচীরের কাছে এসে একটাবার দোতলার বেলকনির দিকে
তাকালাম,রোদের আলোতে বেলকনিটা চকচক করছে।
কেন যানি মনে হচ্ছে বাচ্চা মেয়েটা রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে
আছে,আর ক্ষীণ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
দেরি না করে প্রাচীর টপকিয়ে বাহিরে এসে সোজা বাড়ির
দিকে রওনা দিলাম।
বাড়ি এসেই টেবিলের উপর থাকা পানির জগটা উপরে ধরে ঢকাঢক
এক নিঃস্বাসে অর্ধেক শেষ করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে
ধপাস করে সোফাতে বসে পড়লাম।
এতক্ষণে যেন শরীরে প্রাণের সঞ্চারণ হলো।
নীলা এসে কাঁধে হাত রাখতেই চমকে উঠে
বললাম,”কে,কে?”
নীলা সামনে এসে চোখ উল্টিয়ে বললো,”ভূত। না ভূত
নয়,শাকচুন্নি।”
আমি নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে বললাম,”ওহ তুমি। “
“কেন অন্যকাউকে আশা করেছিলে নাকি?”
“হুম,হলে মন্দ হতো না।”
“কিহ্। কি বললা তুমি?”
“আরে বাদ দাও,
অন্যকাউকে আসা করবো কেন,আর যে মেয়ে সামান্য
কোলবালিশকে তাঁর স্বামীর ভাগ দিতে চায় না,সে একটা
মেয়েকে।
যায় হোক আবরার কোথায়?ওকে দেখছি না যে?”
“রুমে খেলছে। তুমি সকাল সকাল কোথায় বেরিয়েছিলে,গাড়ি
টাও তো রেখে গেছিলে?”
“একটু হাঁটতে বেরিয়েছিলাম।”
“সকাল নয়টার পর?”
“আরে না,কাছেই একটু দরকার ছিলো সেইজন্য। চলো
খেতে দিবা খুব জোর ক্ষুধা লেগেছে।”
“হুম আসো।”
কথাটা বলেই নীলা রান্নাঘরে চলে গেলো।
আমি সোফাতে বসে বসে একমনে ঐ বাড়িতে ঘটে যাওয়া
ঘটনাগুলো আওড়াচ্ছি।
‘এ কিভাবে সম্ভব, একটা মেয়ে আজ দশ বারো বছর পরও একই
রকম কিভাবে থাকতে পারে? আর গতকাল যদি আমি ভুল দেখেও
থাকি তাহলে ঐ মেয়েটাকেই কেন দেখলাম! বাকিদের
চোখে তাহলে কেন পড়লো না?
তাহলে কি মেয়েটার বয়সটা ঐ পাঁচ-ছয় বছরেই আটকে
রয়েছে? আবার গতরাতে দিব্যি সবকিছু মনে হলো নিজের
চোখের সামনেই ঘটে গেলো,অথচ সকালে উঠে নীলার
মুখে যা শুনলাম,তাঁর সাথে সেই সবের কোনোকিছুই ঘটেনি।
তাহলে কি আমি ইদানিং একটু বেশিই কল্পনাপ্রবণ হয়ে যাচ্ছি?
মাথাতে ঢুকছে না। এসব কি হচ্ছে আমার সাথে?
“খেতে আসো।”
নীলার কথাতে সম্মতি ফিরলো আমার।সোফা থেকে উঠে
চোখ-মুখে পানি ছিটিয়ে খেতে খেতে বসলাম।
খাবার খাওয়ার এক পর্যায়ে রান্না ঘরের এক পাশে হঠাৎ করে
দেখলাম ঐ বাড়ির ফ্রেমে দেখা সেই মহিলাটি দেওয়ালের
সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বড় অদ্ভুত দৃষ্টিতে আমার
দিকে তাকিয়ে আছে সে। যেন কিছু একটা বলতে চায়ছে
আমাকে। আমি চিৎকার দিয়ে উঠে বললাম,”কে তুমি? তুমি ঐ বাড়ির
মহিলাটা না! এইখানে কি করছো?”
নীলা আমার চেচামেচি শুনে সেদিকে তাকালো,তারপর
বললো,”কোন মহিলা,আরে ওটা তো আমাদের সারদা মাসি।
গতকাল রাতেই চলে এসেছে গ্রাম থেকে।”
আমি নিজেকে শান্ত আবারো তাকালাম সেদিকে।
হ্যা নীলা তো ঠিকি বলছে,সারদা মাসি দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ এমন
প্রশ্ন করাতে সে বেশ ইতস্তত হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
বললাম,”তুমি যে বললা,মাসির আসতে আরো কয়দিন সময় লাগবে?”
নীলা বললো,”হ্যা বলেছিলাম,তখন মাসি বলেছিলো দেখেই
তো বলেছিলাম। আজকে দেখি সকালে চলে এসেছে।
জিজ্ঞাসা করাতে বললো,তাঁর ছেলে নাকি এখন অনেকটাই সুস্থ্য
তাই চলে এসেছে।”
“কিন্তু আমি সকালে যখন রান্নাঘরে গেলাম তখন তো মাসিকে
দেখলাম না,তাই হঠাৎ দেখে ভেবেছি অন্যকেউ।”
“তখনো ছিলো,মাসিকে একটু বাজারে পাঠিয়েছিলাম,সবজি কেনার
জন্য।”
“ওহ্ আচ্ছ ঠিক আছে।”
আর কিছু না বলে চুপচাপ খেতে লাগলাম।
খাবার শেষে টেবিল ছেড়ে উঠার সময় আরো একবার মাসির
দিকে তাকাতেই দেখলাম,মাসি বড় অদ্ভুত দৃষ্টিতে আমার দিকে
তাকিয়ে আছে অপলকভাবে।
তাঁর দিকে চোখ পড়তেই মুখ বাকিয়ে একটা রহস্যময় হাসি
খেলে গেলো তার ঠোঁটে।
এসবকিছুই ভ্রম,নিজেকে কোনরকমে বুঝিয়ে টেবিল ছেড়ে
উঠে গিয়ে বেলকনিতে দাঁড়ালাম।
বাহিরে রোদ ঝলমল করছে।
আবরার তাঁর নতুন বন্ধুদের নিয়ে বল খেলছে। প্রাণ খুলে
হাসছে ছেলেটা।
ছেলের হাসি দেখে আমার মুখেও সামান্য হাসি খেলে
গেলো।
চারপাশ দেখতে দেখতে আবার চোখ পড়লো রাস্তার ওপাশে
থাকা বাড়িটার বেলকনির দিকে।
রোদ পড়ে চকচক করছে বেলকনিটা। নিজের অজান্তেই
বলে উঠলাম,”আসলেই কি ভূত বলে কিছু আছে? আমার সাথে
গত কয়েকদিনে যা হয়ে এসেছে সেসবের কোনো
বৈজ্ঞানিক ব্যাখা আমার জানা নেই।
কাউকে এসব বললে,সে নিশ্চয় আমাকে পাগল বলে আখ্যায়িত
করবে নয়তো বলবে সবকিছুই আমার কল্পনা।
কারণ কিছুদিন আগে আমি নিজেও এইসবে কখনো বিশ্বাস করিনি।
মানুষ কি মারা যাওয়ার পর আর ফিরে আসতে পারে?
কখনোই ফিরে আসেনা। তাহলে আমার সাথে যেগুলো
হচ্ছে তার ব্যাখা কে দিবে?
“তুমি এখানে? আর আমি সারাবাড়ি খুঁজছি।”
নীলার কথাতে পিছন ফিরে তাকিয়ে বললাম,”কেন কিছু বলবা?”
“নাহ্ তেমন কিছু না। আচ্ছা আমাকে সত্যি করে বলো তো,তুমি
কি আমার কাছ থেকে কোনো কিছু লুকাচ্ছো?”
“তোমার কেন এমনটা মনে হলো?”
“নাহ্,এমনিতেই। কয়দিন ধরে তোমার ব্যবহারের বেশ পরিবর্তন
দেখছি তো তাই। কোনো কিছু নিয়ে সমস্যা হলে আমার সাথে
সেয়ার করতে পারো। সেদিন বললে, আবরারের সাথে কাকে
না কি দেখেছো,আবার বললা আমি নাকি এ বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার
কথা বলেছি তোমাকে,একটু আগে আবার মাসিকে দেখে
চিৎকার দিয়ে উঠলে। তুমি কি কোনো কিছু নিয়ে চিন্তিত।অফিসে
কোনো ঝামেলা হয়েছে কী?”
আমার কাছে বলতে পারো,আর তুমি তখন মাসিকে অন্য একজন
মহিলা বলছিলে,কোন মহিলার কথা বলছিলে?
আমি হেসে বললাম,”আরে নাহ্। তেমন কিছু না। গুরুতর কিছু হলে
তো সবার আগে তোমাকেই বলতাম। ওসব বাদ দাও।”
নীলা খানিকটা হতাশ মনে বললো,”কি জানি। আচ্ছা বাদ দিলাম।
আচ্ছা চলো না আজকে কোথাও থেকে একটু ঘুরে আসি।
তোমার তো আজকে অফিস ছুটি। শুনেছি এইখানে পাশেই
একটা সুন্দর লেক আছে। চলো না সেখান থেকে একটু ঘুরে
আসি। তাহলে দেখবা মনটা অনেকটা হাল্কা হয়ে গিয়েছে।”
আমিও আর না করলাম না,আসলেই এসবের থেকে কিছুটা দূরে
থাকার জন্য হলেও একটু ঘুরাঘুরির প্রয়োজন আছে। না হলে
আজগুবি চিন্তাভাবনা আরো বেশি করে পাকড়ে ধরবে আমাকে।
বললাম,”আচ্ছা ঠিক আছে,তাহলে বিকেলে রেডি হয়ে
থেকো।”
নীলা হেসে জবাব দিলো,”আচ্ছা ঠিক আছে। এখানে দাঁড়িয়ে
কি করছো চলো রুমে চলো।সপ্তাহে তো একটা দিন বাসায়
থাকো আমাকে একটু সময় দিবা তা না,সকাল থেকে পালিয়ে
পালিয়ে বেড়াচ্ছেন উনি।”
কথাটা বলেই হেচকা টানে বেলকনি থেকে সরিয়ে নিলো
আমাকে।
বিকেলে আমরা তিনজন মিলে লেকে ঘুরতে গেলাম। আবরার
তো মহাখুশি। সারাবিকেল খুনসুটিতে কেটে গেলো
আমাদের। রাতে বাহিরে ডিনার করে একবারে বাসায় ফিরলাম।
তিনজনেই বড্ড ক্লান্ত,আবরার তো গাড়ির ভিতরেই ঘুমিয়ে
পড়েছে। বাসায় এসে আবরারকে কোলে নিয়ে রুমে এসে
শুইয়ে দিলাম।
নীলা বললো,”তুমি আর কিছু খাবে? মাসি খাবার গুলো ফ্রিজে
ঠিকঠাক মত রেখেছে কিনা দেখে আসি।”
আমি মোড়ামুড়ি করতে করতে বললাম,”না,আমি আর কিছু খাবো না।
বড্ড ক্লান্ত লাগছে,আমি ঘুমিয়ে পড়লাম।
তুমিও তাড়াতাড়ি এসে রুমের লাইট টা অফ করে দিয়ে শুয়ে
পড়ো।”
“আচ্ছা ঠিক আছে।”
ঘুমের ভিতরে হঠাৎ একটা শব্দ শুনে জেগে উঠলাম।
তাকিয়ে দেখি নীলা ড্রইং রুমে হাঁটাহাটি করছে। বিছানা ছেড়ে
উঠে বসলাম।
‘এতো রাতে নীলা না ঘুমিয়ে হাঁটাহাটি করছে কেন?
কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করার পর দেখলাম, সদর
দরজা খুলে বাহিরে দিকে সঠান হেঁটে চলে যাচ্ছে নীলা।
জানবার ইচ্ছে আমাকে ভাবিয়ে তুললো,
আমি খাট থেকে নেমে বেশ কয়েকবার নীলাকে ডাক
দিলাম,কিন্তু কেন যানি মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বার হলো না
আমার।
‘এতো রাতে নীলা বাহিরে কোথায় যাচ্ছে?
খাট থেকে নেমে নীলাকে উদ্দ্যেশ্য করে তাঁর পিছু নিয়ে
হাঁটা শুরু করে দিলাম।
নীলা সোজা বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তার ওপাশে থাকা বাড়িটার
কাছে গিয়ে গেইটের সামনে থমকে দাঁড়ালো।
আমি আরো কয়েকবার তাকে ডাকার চেষ্টা করলাম, কিন্তু মুখ
দিয়ে কোনো শব্দ বার হলো না।
বেশ খানিকটা অবাক হয়ে তাকিয়ে রয়লাম, দেখলাম দিনের
আলোতে তালা বন্ধ হয়ে থাকা গেইট টা আপনা-আপনি খুলে দু
পাশে ভাগ হয়ে গেলো।
নীলা সন্তপর্ণে ভিতরে ঢুকে গেলো।
আমিও তাঁর পিছু নিয়ে ভিতরে ঢুকলাম।
নীলা ধির গতিতে বাড়ির সদর দরজার দিকে এগিয়ে যেতেই
দেখলাম সেটাও নিজ থেকে খুলে গেলো। নীলা যেন
এখন নীলার ভিতরে আর নেই। তার সাথে হাজারো অদৃশ্য শক্তি
তাকে ঘিরে ধরে আছে। কিন্তু নীলা ভিতরে ঢুকছে কেন?
আর ও এই বাড়িতে এমনভাবে ঢুকছে যেন তাঁর নিত্যদিন যাতায়াত এই
বাড়িটাতে।
কিন্তু বাড়িটা তো সুবিধার নয়, বাড়িটা তো অভিশপ্ত।
নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারলাম না।
ছুটে গিয়ে পিছন থেকে নীলার হাতটা ধরতেই অনুভব
করলাম,নীলার হাতটা বরফের মত ঠান্ডা হয়ে আছে।
হাতটা ধরতেই নীলা ঘুরে তাকালো, মূহুর্তেই শরীরে বিদ্যুৎ
খেলে গেলো, শক খাওয়ার মত ঝাটকা লাগলো আমার।
গতরাতে নীলার বলা ভয়ংকর সেই বিবরণের সাথে এখন এই
মেয়েটার হুবুহু মিলে যাচ্ছে। পুরো শরীর ফ্যাকাশে,যেন
কেউ শরীরের সমস্ত রক্ত শুষে নিয়ে শুধু শরীরটাকে
ছেড়ে দিয়েছে। চোখের ভিতরের মনি দুটো কেউ যেন
খুবলে নিয়ে কালোর পরিবর্তে সাদা চুন লাগিয়ে দিয়েছে।
এটাতো নীলা না!! তাহলে নীলা কোথায়?
এবার মুখ দিয়ে কথা বেরিয়ে এলো আমার,কাপাকাপা কণ্ঠে
বললাম,”কে কে তুমি?”
মেয়েটা হা হা করে হাসতে লাগলো। সে হাসির শব্দ যেন
কানের পর্দা ভেদ করে সোজা হৃৎপিন্ডতে গিয়ে আঘাত
করছে আমার।
আমি স্বজোরে হাতটা টান মেরে ছাড়িয়ে নিতে চায়লে মনে
হলো হাতটা আমার হলেও সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করছে
অন্যকেউ।
সাতপাঁচ কোনোকিছু ভাবার আগেই মেয়েটা আমাকে টেনে
নিয়ে যেতে লাগলো ভিতরের দিকে। আমি যতবারই টান দিয়ে
হাতটাকে ছাড়িয়ে নিতে চায়ছি ততোই যেন হাতটা আরো বেশি
করে আটকে যাচ্ছে তাঁর হাতের সাথে।
জোরে চিৎকার দিতে গিয়েও কেন যানি মুখ দিয়ে কোনো
শব্দ বার হচ্ছে না আমার।
কেউ যেন আমার বাকশক্তি ছিনিয়ে নিয়েছে।
প্রাণপণে মেয়েটার থেকে রেহায় পাওয়ার জন্য ছটফট
করতে থাকা আমাকে টানতে টানতে ভিতরে নিয়ে গিয়ে সিড়ি
বেয়ে উপরে উঠতে লাগলো মেয়েটা।
আমার হাত-পা, পুরো শরীরের পেশীগুলো যেন কাজ করা
বন্ধ করে দিচ্ছে ধিরে ধিরে।
মেয়েটা ঠিক সেই রুমটাতেই আমাকে নিয়ে গেলো যেই
রুমটাতে দিনের বেলাতে আমি এসেছিলাম।
রুমে আসার পর দিনের বেলাতে দেখা সেই ওয়ারড্রবের
কাছে এনে হাতটা ছেড়ে দিলো আমার।
আমি হাত মুক্ত দেখে উঠে পালানোর চেষ্টা করলেও
পালাতে ব্যর্থ হলাম।
মেয়েটা এবার দু হাত দিয়ে স্বজোরে হাতল ধরে ওয়ারড্রবের
পাল্লা দুটো টান দিতেই পঁচা গন্ধে নাক বন্ধ হয়ে আসলো
আমার।
ওয়ারড্রবের ভিতরে দুজন মানুষের লাশ পড়ে আছে।লাশ দুটো
পঁচে গলে একটা আরেকটা সাথে লেপ্টে গিয়েছে।
হাজারো মাংসাশী পোকা যেন লাশ দুটোর পুরো শরীরে
ছড়িয়ে থেকে মাংসগুলো পরম তৃপ্তির সহিত খাচ্ছে।
এমন বিভৎসতা দেখে যেন আমার চোখ দুটি খুবলে গিয়ে
খসে পড়ে যেতে চায়ছে এখনি।কি হচ্ছে এসব? বিভৎসতা যে
আর কোনভাবেই চোখদুটি সহ্য করতে পারছে না আমার।
আমাকে দেখে লাশের উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মাংসাশী
পোকাগুলো এবার আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো পঁচা
লাশদুটোকে ছেড়ে।
আমি প্রাণপণে চিৎকার দিতে গিয়েও কেন যানি মুখ দিয়ে
কোনো শব্দ বের হচ্ছে না।
তাহলে কি আমারো একই অবস্থা হবে? এই লাশদুটোর মত
করে কি আমার পুরো শরীরটাকেও এই মাংসাশী পোকা গুলো
পরম তৃপ্তির সহিত খুবলে খুবলে খেয়ে শরীর থেকে
মাংসগুলো আলাদা করে দিবে?
ভাবতেই গায়ে কাটা দিয়ে উঠছে,একটা পোকা এসে হাতে কামড়
দিতেই চিৎকার দিয়ে উঠলাম। কেউ যেন শতশত সুই হাতের
ভিতরে একত্রে ঢুকিয়ে দিয়েছে।
ব্যাথাতে কাতরাচ্ছি আমি।তবুও যেন কেউ আমার আর্তনাদ শুনতে
পাচ্ছে না।
বিশাল এই পৃথিবীর বুকে যেন নিজেকে এইমূহুর্তে খুব তুচ্ছ
মনে হচ্ছে,
নিজেকে এদের থেকে বাঁচাতে না পেরে।
শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে এবার শেষবারের মত আর্তনাদ
করে উঠলাম নিজেকে বাঁচানোর জন্য।

“এই কি হয়ছে ওমন করছো কেন? এই আশিক,আশিক। কি হয়ছে
তোমার?”
নীলার ধাক্কাধাক্কিতে ঘুম ভাঙ্গলো। চোখ মেলে তাকিয়ে
যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। তারমানে এতক্ষণ দুঃস্বপ্ন দেখছিলাম।
দুঃস্বপ্ন এতোটা বিভৎস আর ভয়ংকর হয় জানা ছিলো না।
“কি হয়ছে,ওমনভাবে গোঙ্গানি দিচ্ছিলে কেন? কোনো খারাপ
স্বপ্ন দেখেছো কী?”
আমি খানিক্ষন চুপ থেকে পাশের থাকা বোতলটা হাতে নিয়ে পানি
পান করার পর বললাম,”হুম,খুব ভয়ানক একটা দুঃস্বপ্ন দেখেছি। কিন্তু
কি দেখেছি সেটা মনে নেই। শুধু মনে আছে তুমি আমাকে
টেনে হিচড়ে কোথায় যেন নিয়ে যাচ্ছিলে।”
নীলা চোখ দুটি গোলগোল করে বললো,”আমি! আমি
তোমাকে টানছিলাম। যাক স্বপ্নের ভিতরেও তো তোমাকে
টানার সৌভাগ্য হয়েছে আমার।”
“তুমি চায়লে বাস্তবেও ঠ্যাং ধরে টানতে পারো,কি টানবা নাকি?”
“আরে ধুর কি বলো, এ শেষরাতে এখন আমার কাজ নেই
তোমাকে ধরে টানাটানি করতে যাবো আমি। ঘুমাও তো,একটু
পরেই আবার ভোর হয়ে যাবে।”
নীলা আমার কাছ থেকে উঠে গিয়ে ওপাশে আবার শুয়ে
পড়লো।আমি চুপচাপ ঘুমানোর ভান ধরে পড়ে থাকলাম বিছানার
উপরে।
‘হঠাৎ এমন স্বপ্ন দেখার কারণ কী? ওরা দু’জনে চায়ছে টা কি
আমার কাছে? ঐ বাড়ির মালিক সম্পর্কে আমাকে জানতে হবে।
নিশ্চয় এমন কোনো দূর্ঘটনা লুকিয়ে আছে লোকচক্ষুর
আড়ালে যা কেউ জানে না।
সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে ভোরের আযান পড়লো। বিছানা ছেড়ে
উঠে ফজরের নামাজ পড়ে আর ঘুম আসলো না। মাথার ভিতরে
দুঃস্বপ্নটা চক্রাকারে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
সকালে অফিসে যাওয়ার পথে আবরারকে তার স্কুলে নামিয়ে
দিয়ে আমি পিছনে মোড় নিলাম। সামনের মোড়ে আমাদের
বাড়ির মালিকের বাসা,ওর সাথে কথা বলে যদি কোনো কিছু জানা
যায়,সেই উদ্দ্যেশ্যে রওনা দিলাম।
বাড়ির সামনে যেতেই দেখলাম,বাড়ির মালিক বারান্দাতে বসে বসে
খবরের কাগজ পড়ছে আর চা খাচ্ছে।
আমাকে গাড়ি থেকে নামতে দেখে পত্রিকা থেকে মুখে
তুলে তাকালেন ভদ্রলোক।
তারপর বললেন,”আরে আশিক সকাল সকাল কি মনে করে?
আসো আসো।
তারপর একজন মহিলার নাম ধরে ডেকে বললেন,চা দিতে।
আমি ভদ্রলোককে চা দিতে বারণ করে একটা চেয়ার টেনে
নিয়ে বসলাম।
ভদ্রলোক হেসে বললেন,”তারপর নতুন বাড়িতে কেমন
লাগছে,বাড়িওয়ালা হিসেবে তো আর তোমাদের কোনো
খোঁজই নিতে পারলাম না। একা মানুষ তারউপরে আবার হাঁটুর ব্যাথাটা
বেড়েছে নয়তো সময় করে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে
আসতাম তোমাদের।”
আমিও হেসে জবাব দিলাম,”না তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
এতো কম টাকা দিয়ে এতবড় একটা বাড়ি পেয়েছি,আর তাছাড়াও
আমার স্ত্রী আর ছেলেরও বাড়িটা খুব পছন্দ হয়েছে।”
বাড়িওয়ালা কথাটা শুনে বেশ প্রফুল্ল মনে বললেন,”তা বেশ
বেশ। তা বাবা কোনো দরকার ছিলো নাকি?”
আমি ইতস্ততভাবে বললাম, “হ্যা চাচা। আপনার কাছে কিছু জানার
ছিলো।”
“হ্যা বলো,কি জানতে চাও?”
“আসলে আমাদের অপজিটে যে ডুপ্লেক্স বাড়িটা আছে।
সেই বাড়িটার সম্পর্কেই কিছু জানার ছিলো?”
কথাটা শোনার পর দেখলাম বাড়িওয়ালার কপালে খানিকটা ভাজ পড়ে
গিয়েছে।
বাড়িওয়ালা অনিচ্ছুক হয়ে বললেন,”তুমি কি ঐ পরিত্যক্ত বাড়িটার কথা
বলছো?”
“হ্যা।”
“কি জানতে চাও বলো?”
“না তেমন কিছু না,আসলে এখানে আসার পর থেকে
লোকমুখে নানান কথা শুনতে পাচ্ছি তো তাই।”
“কি কথা,ঐ বাড়িতে ভূত থাকে,বাড়িটা অভিশপ্ত এইসব তাই তো?”
“হ্যা। আপনি ঠিকি ধরেছেন। সেদিন আমার গাড়ির ড্রাইভারও একই কথা
বলছিলো।”
“তা তোমার কি মনে হচ্ছে,তুমি তো বাড়িটার একদম কাছেই
থাকো। রাস্তার এপার-ওপার। তোমার চোখে কি ওসব কিছু
পড়েছে?”
“নাহ্ তেমন কিছু পড়েনি। আচ্ছা ঐ বাড়িটাতে কারা থাকতো,আর এখন
থাকেনা কেন?”
বাড়িওয়ালা এবার পত্রিকার কাগজটা একপাশে সরিয়ে রেখে
বললো,” ঐ বাড়ির মালিক আসলে এখানকার না। লন্ডনে থাকতো
তাঁরা সহপরিবারে। নাম জাফর চৌধুরী।
মাঝেমধ্যে কাজের ব্যস্ততা কাটাতেই ঐ বিলাসবহুল বাড়িটা
বানিয়েছিলো বাড়ির মালিক।
দেশে আসলে যে কয়টাদিন থাকতো ঐ বাড়িতেই থাকতো।
তারপর আবার চলে যেতো,তবে ঐ বাড়ির দায়িত্ব দেওয়া
হয়েছিলো ঐ বাড়ির কেয়ারটেকার সুমনকে।বেশ বিশ্বস্ত
লোক ছিলো। তবে বিশ্বস্থ থাকলে কি, কথায় আছেনা সবকিছুর
নষ্টের মূলে নারী। ওদের ক্ষেত্রেও ঠিক একই জিনিস
ঘটেছিলো।
কেয়ারটেকারের নাম ছিলো সুমন,দেখতে বেশ সুঠাম আর
শ্যামবর্ণের হলেও চেহারাতে একধরনের মায়া ছিলো।
হয়তো সেই মায়াতে আচ্ছন্য হয়ে পড়েছিলো বাড়ির
মালকীন।আর এভাবে আসা যাওয়ার এক পর্যায়ে নাকি বাড়ির
মালকীনের সাথে সুমনের অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো
বলে শোনা যায়।
“তারপর?”
“তারপর আর কি ঐ বাড়ির মালকীন তাঁদের পাঁচ বছরের মেয়েকে
নিয়ে নাকি সুমনের হাত ধরে পালিয়ে যায়।”
“বাড়ির মালিক তাঁদের খোঁজার চেষ্টা করেনি?”
“তা আবার করেনি,করেছিলো। এখানকার স্থানীয় থানাতে
বলেছিলো,পুলশি কিছুদিন খোঁজার পর বিষয়টা ধিরে ধিরে চাপা
পড়ে গিয়েছিলো।তারপর ভদ্রলোক একাই আবার লন্ডনে
ফিরে গিয়েছিলো। আর কখনো এবাড়িতে আসেন নি। তারপর
থেকেই এই বাড়িটা পরিত্যক্ত হিসাবেই পরিচিত সবার কাছে। এলাকার
মানুষে নানান ধরনের কথা তুলেছে বাড়িটাকে নিয়ে।
তবে আমি কখনো ওসব বুঝতে পারিনি,এমনকি কখনো
দৃষ্টিগোচরও হয়নি আমার।
বুঝতেই তো পারছো,সাধারণ মানুষ তিলকে তাল বানাতে এদের
কোনো জুড়ি নেই।”
বাড়িওয়ালার থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম। বাড়িওয়ালার কথামত যদি
ঐ বাড়ির মালকীন কেয়ারটেকারের সাথে অন্যত্র চলে
যায়,তাহলে আমাদের সাথে যেগুলো হচ্ছে তার ব্যাখা কে
দিবে? আদৈও কি ঐ বাড়ির মালকীন চলে গিয়েছিলো, নাকি ঘটনার
আঁড়ালেও অন্য কোনো ঘটনা লুকিয়ে আছে,যা সবার অজানা?
অফিসের ডেস্কে বসে আছি এমন সময় একজন ভারী
কণ্ঠজড়িত লোক এসে বললো,”স্যার ভালা আছেন?”
একটা জরুরি ফাইল নিয়ে ঘাটাঘাটি করছিলাম,তাই সেদিকে না তাকিয়েই
বললাম,”এখন চা খাবো না। পরে ইচ্ছে করলে ডেকে নিবো।”
সামনে থাকা লোকটা কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ডেস্কের উপর
একটা সাদা কাগজ রেখে চলে গেলো।
আমি ফাইল থেকে চোখ সরিয়ে সামনের দিকে তাকাতেই
দেখলাম,আমাদের অফিসের চা বয় করিম চাচা দূরে দাঁড়িয়ে
আছে।
কাগজটা হাতে নিয়ে দেখলাম তাতে একটা ফোন নাম্বার লিখা
রয়েছে।
চা বয় চাচাকে ডাক দিলাম।
“করিম চাচা একটু এদিকে আসো তো।”
করিম চাচা সন্তপর্ণে ছুটে এসে বললো,”হ স্যার কিছু কইবেন,চা
লাগবো নি?”
আমি হেসে বললাম,”না চাচা,এইটা কিসের কাগজ দিয়ে গেলে
আমাকে? কার ফোন নাম্বার এইটা?”
করিম চাচা খানিকটা অবাক হয়ে বললো,”স্যার আমি তো আপনারে
কিছু দেয় নাই।”
“একটু আগেই না আমার ডেস্কের সামনে এসে কাগজটা দিয়ে
গেলে আমাকে?”
“নাতো স্যার,আমি তো আমার জায়গাতেই দাঁড়াইয়া ছিলাম। আপনি
ডাকনের পর আইছি।”
“তুমি ছাড়া কি আর কোনো লোক এসেছিলো,বয়স্ক টাইপের?
বা আমার ডেস্কের কাছে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছো
কাউকে একটু আগে?”
“কোই নাতো,কাউরে তো দেখি নাই।”
দারোয়ানকে জিজ্ঞাসা করলে সেও জানালো,সে ওমন
কোনো লোককে ভিতরে আসতে দেখেনি।
কাগজটা হাতে নিয়ে চেয়ারে ধপাস করে বসে পড়লাম।
একটু আগে তাহলে যে বয়স্ক লোকটা আমার ডেস্কের
সামনে এসেছিলো সে কে ছিলো?
আর কেউ যদি না আসে,তাহলে কাগজটা কে দিয়ে গেলো?”
কোনোকিছু না ভেবেই কাগজে থাকা নাম্বারটা মোবাইলে টাইপ
করে কল দিলাম। ল্যান্ড ফোনের নাম্বার।নাম্বারে রিং হচ্ছে। রিং
শেষ হওয়ার মূহুর্তে একজন ভারী কণ্ঠে বলে
উঠলো,”হ্যালো জাফর বলছি?”
আমি ফোনটা কানে নিয়ে কিছুক্ষণ বাকরুদ্ধ হয়ে বসে
রয়লাম,ওপাশ থেকে একনাগাড়ে ভদ্রলোক হ্যালো হ্যালো
করেই চলেছে।
এই জাফর কি সকালে বাড়িওয়ালার বলা ঐ জাফর?
আমি বললাম,”হ্যালো। আমি কলাতলীর সাত নাম্বার রোডের
বারো নাম্বার বাসার ভাড়াটিয়া বলছিলাম।”
ফোনের ওপাশটা কিছুক্ষণ নিরব থাকার পর
বললো,”কলাতলী,কোন কলাতলী?”
“কুসুমপুর কলাতলী,আপনি তো জাফর চৌধুরী তাই না?”
লোকটা এবারো কিছুক্ষণ চুপ থেকে তারপর বললো,”ওহ
আচ্ছা,তা কে বলছেন আর কেন ফোন দিয়েছেন,নাম্বার
কোথায় পেয়েছেন আমার?”
“আসলে সেসব বলতে গেলে অনেক সময় লাগবে।
আসলে আপনার কাছে যে জন্য ফোন দিয়েছি, আপনার
ফেলে রাখা ডুপ্লেক্স বাড়িটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে।
আর আমি একজন কর্পোরেট অফিসার,আপনার বাড়ির সামনের বাড়ির
ভাড়াটিয়া।
আসলে আপনার বাড়িটা যেহেতু খালি পড়ে আছে,আমি চায়ছিলাম
আপনার বাড়িটা ভাড়া নিতে।”
লোকটা এবার বেশ ক্ষিপ্ত কণ্ঠে বললো,”আপনি কি আমাকে
টাকার লোভ দেখাচ্ছেন,ঐ সামান্য কিছু ভাড়ার টাকা দিয়ে তো
আমার একদিনও চলবে না।”
আমি নিজেকে শান্ত রেখে বললাম,”তা জানি,তবে আপনার বাড়িটা
তো শুধু শুধু পড়ে নষ্ট হচ্ছে।
এতো বিলাসবহুল বাড়িটা পরিচর্যার অভাবে নষ্ট হচ্ছে দেখেই
আপনাকে ফোন দিয়েছিলাম,আপনি যখন রাজি না তাহলে আর কি
করার।”
কথাটা বলে ফোন রেখে দিচ্ছিলাম,তখনি ওপাশ থেকে ভেসে
আসলো,”আপনার যখন বাড়িটা এতোই মনে ধরেছে,তাহলে
আপনি চায়লে বাড়িটা একবারে কিনে নিতে পারেন,পারবেন?”
ভদ্রলোককে সামনা-সামনি যেহেতু দেখার ইচ্ছে ছিলো,তাই
বললাম,”হ্যা পারবো। তারজন্য তো আপনাকে এখানে আসতে
হবে।”
“আচ্ছা ঠিক আছে,আর তাছাড়া আমি এমনিতেও যেতাম। বাড়িটা বিক্রির
জন্য,কয়েকজন বিল্ডারের সাথেও এ বিষয়ে কথা বলে
রেখেছি। আপনার যেহেতু বাড়িটা এতোই পছন্দ
হয়েছে,তাহলে আপনার সাথে একটাবার বসা যেতেই পারে।
আমি কয়েকদিনের ভিতরে বাংলাদেশে যাচ্ছি। তখন কথা হবে।”
বলেই লোকটা লাইনটা কেটে দিলো।
আমি ফোনটা হাতে নিয়ে হতভম্ব হয়ে বসে ভাবতে লাগলাম,এই
লোকটাকে যে আমি মনে খুঁজছি মনে খুঁজছি তা অন্যকেউ
জানলো কিভাবে?
আমি তো কাউকে বলিও নি,আর যেই লোকটা আমাকে কাগজটা
দিয়ে গেলো সেই বা কে ছিলো? ভদ্রলোক আসলেই
সবকিছু পরিস্কার হয়ে যাবে।
..

অন্তিম পর্ব)
দিনকে দিন কি আমি আরো বেশি করে অসুস্থ্য হয়ে যাচ্ছি? কি
হচ্ছে এসব আমার সাথে। যা আমি দেখি তা আর কেউ দেখতে
পাচ্ছে না কেন?
এসব ভাবতে ভাবতে আমার সামনের দেওয়ালে থাকা সি সি
ক্যামেরার দিকে চোখ পড়লো।
ক্যামেরাটা ঠিক আমার ডেস্কের অপরপ্রান্তে বসানো
রয়েছে। সুতরাং আমার ডেস্কের সামনে যে কেউই আসুক না
কেন সে ঐ ক্যামেরাতে ধরা পড়বে।
ছুটে গেলাম কন্ট্রোল রুমে,গিয়ে কন্ট্রোলারকে আমার
ডেস্কের সামনে থাকা সি সি ফুটেজটা দেখাতে বললাম।
দেখলাম মনিটরে একজন আপাদমস্তক কালো চাদরে
মোড়ানো লিকলিকে চেহারার আগুন্তকঃ ধির গতিতে আমার
ডেস্কের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। তারপর আমাকে কিছু একটা
বলছে,হয়তো ‘ভালা আছেন স্যার’ এই কথাটায় বলছিলো। আমি
আমার ফাইলটার দিকে মাথা নিচু করে ব্যস্ত হয়ে আছি।
লোকটা এবার চাদরের ভিতর থেকে ডান হাতটা বার করে একটা
কাগজ রেখে দ্রুত গতিতে আবার চলে গেলো।
ফুটেজটা ফ্রিজ করার পরও লোকটার মুখটা ঠিকমত ঠাওরে উঠতে
পারলাম না।
কারণ পুরো মুখটা চাদর দিয়ে মোড়ানো।
তাহলে চা বয় করিম চাচা আর দারোয়ান যে বললো তারা কাউকে
আমার ডেস্কের সামনে আসতে দেখেনি,তাহলে এই
লোকটাকে ক্যামেরা কিভাবে ধারন করলো?
অফিসের অন্য স্টাফদের বললে হয়তো বিষয়টা আরো জটিল
হতে পারে,সেই ভয়ে ঘটনাটা চেপে গেলাম।
আজ পাঁচ-ছয়দিন পর খুব সকালে একটা অচেনা নাম্বার থেকে
সকালে ফোন আসলো,রিসিভ করতেই একজন পুরুষালী
কণ্ঠে বললো,”আমি বাংলাদেশে এসেছি।
কয়েকঘন্টার ভিতরে কুসুমপুর পৌঁছে যাবো।আপনি ফ্রি আছেন
তো?”
কথাগুলো শুনে বুঝতে বাকি রয়লো না,সামনের বাড়িটার মালিক,
জাফর চৌধুরী আসছেন তাহলে।
আমি একগাল হেসে জবাব দিলাম,”হ্যা একদম ফ্রি আছি। আপনি
সোজা এসে আমার বাসায় উঠবেন,একসাথে দুপুরের খাবার
খাবো।”
ওপাশ থেকে ভদ্রলোক হেসে লাইনটা কেটে দিলো।
আমি দ্রুত অফিসে ফোন দিয়ে পেট খারাপের কথা বলে ছুটি
নিয়ে নিলাম।
এদিকে নীলাকেও বললাম,দুঃসম্পর্কের এক কাজিন আসছে বাহির
থেকে, আমাদের বাসাতেই উঠবে সে।তাঁর জন্য যেন খাবার
রেডি করে রাখে।দুপুরে একসাথে খাবো।
নীলা আর মাসি রান্না করাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো,আর আমি
আবরারকে স্কুলে রেখে এসে অপেক্ষা করতে
লাগলাম,ভদ্রলোকের আশার পথ চেয়ে।
দুপুরের দিকে রাস্তার ওপাশে থাকা বাড়ির সামনে একটা গাড়ি এসে
থামলো,বাসা থেকে বার হয়ে সেদিকে গেলাম।
গাড়ির ভিতর থেকে একজন মাঝবয়সী ভদ্রলোক নেমে
দাঁড়ালো। বাড়িটার দিকে তাঁর তাকানোর ভঙ্গিমা আর পোষাক
দেখে খুব একটা বেগ পেতে হলো না ভদ্রলোককে
চিনতে। ইনিই তাহলে এই বাড়ির মালিক,জাফর চৌধুরী। নামের সাথে
চেহারা আর পোষাক-পরিচ্ছেদের বেশ মিল আছে।
পরনে ছাঁয় রংয়ের একটা কোর্ট পরা ,চোখে হাল্কা ফ্রেমের
চশমা, মাথায় কাঁচাপাকা চুল সেই সাথে বাদামী রংয়ের সুঠাম দেহটাতে
একটা চৌধুরী চৌধুরী ভাব আছে।
আমাকে আসতে দেখেই ভদ্রলোক বলে উঠলো,”
আসসালামু আলাইকুম। আমার নাম জাফর চৌধুরী। “
বলেই হ্যান্ডশেকের জন্য হাতটা বাড়িয়ে দিলেন।
আমিও হাসি মুখে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললাম,”আমি আশিক, আমার
সাথেই আপনার কথা হয়েছিলো।”
“ওহ্ আচ্ছা, আপনিই সেই ভদ্রলোক।”
“হ্যা, আমার বাড়ি রাস্তার ওপাশে,ঐযে ,ওখানে ফ্রেশ হয়ে
দুপুরের খাবার খেয়ে তারপর না হয় এ বাড়িতে আবার আসা যাবে।
ভদ্রলোক গাড়িটা ছেড়ে দিয়ে আমার সাথে হাঁটতে লাগলো।
লোকটা তাঁর সাথে করে শুধু একটা হ্যান্ডব্যাগ ছাড়া আর কিছুই নিয়ে
আসেনি।
হয়তো ঐ ব্যাগের ভিতরেই বাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র
আছে।
জাফর সাহেবকে একটা রুম দেখিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিতে
বললাম।
নীলা আর মাসি খুব যত্ন করে তৈরী করা স্বাধের খাবারগুলো এক
এক করে টেবিলে এনে সাজিয়ে রেখে আবার ভিতরে চলে
গেলো।
জাফর সাহেব ফ্রেশ হয়ে বাহিরে আসলে হরেক পদের খাবার
দেখে আমার স্ত্রীর বেশ প্রশংসা করলেন।
তারপর একটা চেয়ার টেনে বসে পড়লেন।
ভদ্রলোক আমার বয়সেরই হবে,হয়তো আমাদের দু’জনের
ভিতরে কয়েকবছরের ব্যবধান।
জাফর সাহেব খাবার মুখে দিয়ে বললেন,” আপনার স্ত্রী, সন্তান
ওরা কোথায়? কাউকে দেখছি না যে?”
আমি নীলাকে ডাক দিতেই মাসি আর নীলা দু’জনে দরজার মুখে
এসে দাঁড়ালো।
জাফর সাহেব খাবার খেতে খেতে নীলার দিকে তাকিয়ে
বললো,”আপনি অনেক সুন্দর রান্না করেন,অনেকবছর পর আজ
বাঙ্গালী খাবার খাচ্ছি তাও অনেক তৃপ্তি করে।”
নীলা হেসে জবাব দিলো,”আপনি আসবেন শুনে এই অল্পকিছু
রান্না করা হয়েছে ভাইয়া।আপনার ভাই যদি আমাকে আগে বলতো।
আপনারা বিলেতি মানুষ,আমাদের দেশীয় খাবার তো ভুলেই
গিয়েছেন একবারে।”
জাফর সাহেব বললেন,”এতো খাবার সব আমার জন্য রান্না
করেছেন,আগে জানলে তো দুদিন না খেয়ে থেকে তারপর
আসতাম।”
জাফর সাহেবের কথা শুনে যা বুঝলাম,তিনি খুব মজার মানুষ। সেই
সাথে বেশ ভোজনপ্রিয়।
খাবার খাওয়া শেষ করে জাফর সাহেবকে রুমে বিশ্রাম নিতে
বলে আমি আবরারকে নিয়ে আসলাম।আবরারাকে পেয়ে জাফর
সাহেব আরো বেশি খুশি হলেন।
আবরারের আদর মাখানো কথার ঝুড়িতে জাফর সাহেবকে
আরো বেশি মুগ্ধ করলো।
খুব কম সময়ে দু’জনে অনেক ভালো বন্ধু হয়ে গেলো।
আমি মনে মনে যা সন্দেহ করেছিলাম,লোকটাকে দেখে
তো সেরকম লাগছে না। ভদ্রলোক বেশ সহজ-সরল আর সাদা
মনের মানুষ।
বিকেলের দিকে একটা জরুরী কাজে বের হওয়ার নাম করে
জাফর সাহেবের সাথে তাঁর বাড়িতে আসার জন্য বার হলাম।
বাড়ির সামনে আসতেই ভদ্রলোক একটাবার পুরো বাড়িটার দিকে
তাকালেন,তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে পকেট থেকে চাবিটা
বার করে গেইটের তালা খুললেন।
দীর্ঘদিন গেইটটা বন্ধ হয়ে থাকাতে,সম্পূর্ন খুললো না।
সামান্য সরিয়ে দিয়ে দু’জনে ভিতরে ঢুকলাম।
এক পা এক পা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি আর জাফর
সাহেব এদিক সেদিক তাকিয়ে দেখছে।
হয়তো পুরনো স্মৃতিগুলো আওড়াচ্ছেন তিনি।
বাড়ির সদর দরজার সামনে এসে থমকে দাঁড়ালেন, তারপর আমার
দিকে তাকালেন ভদ্রলোক।
লক্ষ্য করলাম,তার চোখের কোণে জল জমে গিয়েছে।
ভদ্রলোক ঘুরে দাঁড়িয়ে বললেন,” জানেন তো, এই বাড়িটা
আমার অনেক সখের একটা বাড়ি। বাড়িটার প্রতিটা রন্ধ্রে রন্ধ্রে
আমাদের স্মৃতি লুকিয়ে আছে।
ঐযে ওখানে আদ্রিতাকে নিয়ে রোজ বিকেলে খেলা
করতাম।
আর আমার স্ত্রী বসে বসে আমাদের বাবা-মেয়ের খেলা
দেখতো।
সব হারিয়ে গিয়েছে,সবকিছুই এখন শুধু স্মৃতি। অনেকবার আসতে
চেয়েছি এইবাড়িটাতে,কিন্তু আসতে মন চায়নি।
কেন যানি মনে হয়,এই বাড়িতেই আমার স্ত্রী আর মেয়ে
আজও লুকিয়ে আছে।
ঐ বেয়াদব কেয়ারটেকার টাকে যদি কোনোদিন চোখের
সামনে পাই,সেইদিনই গুলি করে মারবো তাকে।
আমার স্ত্রীকে নিয়ে ওতো ভাবি না,একজন বেইমানকে নিয়ে
ভেবে কষ্ট পেতে চাইনা আমি,তবে আমার মেয়েটার জন্য
খুব কষ্ট হয়,না জানি কেমন আছে কোথায় আছে মেয়েটা?”
জাফর সাহেবের কথাগুলো শুনে নিজের কাছেই খুব খারাপ
লাগছে,এতো সহজ সরল একজন মানুষকে কিভাবে তাঁর স্ত্রী
এতোবড় একটা ধোঁকা দিলো?
লোকটার আজ সব কিছু থাকলেও তাঁর জীবনে ভালোবাসাটার
বড্ড অভাব।
জাফর সাহেব আবার বললেন, “আপনার গাড়িটা আমাকে দিবেন,আমার
একটু কেনাকাটার দরকার ছিলো।
এসেই যখন পড়েছি,কিছুদিন কাটিয়ে যেতে চায় আপনাদের
সাথে। আবরারের সাথে।”
আমি বললাম,”এভাবে বলছেন কেন,আপনি তো আমার বড়
ভাইয়ের মত।
আপনার যে কয়দিন মন চায়,আপনি থাকবেন। বরং আপনি থাকলে
আমাদেরই আরো ভালো লাগবে।”
জাফর সাহেব হাসলেন,তারপর বললেন,”তাহলে চলুন। দিনের
আলো ফুরানোর আগেই কেনাকাটা করে আসি।
কালকে সকালে বাড়িটা ভালো করে দেখে তারপর বাকি কথা
হবে।”
আমিও আর জোর করলাম না।
দু’জনেই বেরিয়ে আসলাম। তারপর আমার গাড়ির চাবিটা দিয়ে
বললাম,”আমার ড্রাইভার কি যাবে আপনার সাথে?”
“না আমি একাই যেতে পারবো। একটা সময় তো এখানেই থাকতাম
আমি,পথে ঘাট সব পানির মত মুখস্থ আমার।”
কথাটা বলেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো জাফর সাহেব।
সন্ধ্যার একটু পরে জাফর সাহেব ফিরলো।
সাথে দেখলাম আবরারের জন্য গাড়ি ভর্তি খেলনা।
এসব দেখে বললাম,”এসব কি কিনেছেন? আপনি না বললেন
আপনার জন্য কেনাকাটা করবেন?”
“এগুলোই আমার, আবরার আর আমি খেলা করবো এগুলো
দিয়ে।”
বলেই হেসে আবরারের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো।
আবরার তো নতুন খেলনা পেয়ে মহাখুশি।
ভদ্রলোকের এমন পাগলামি দেখে বেশ খানিকটা কষ্টও
লাগলো। সন্তান হারানো পিতা হয়তো আজকে নতুন
আরেকজনকে সন্তানকে পেয়ে দুঃখটাকে ভুলবার চেষ্টা
করছে।
হয়তো আবরারের ভিতরে তাঁর মেয়েকে খুঁজে
পেয়েছে। সেই জন্যই একটু বেশি আদর করছে।
রাতে খাওয়া দাওয়া করার পর সবাই মিলে অনেক মজা করলাম।
একাকিত্ব কাটাতে পেরে জাফর সাহেব যেন আজকে একটু
বেশিই খুশি,আমাদের সবাইকে পেয়ে।
রাত একটু গভীর হলে জাফর সাহেব বললেন,”আজকে অনেক
কথা-বার্তা হলো।অনেকদিন পর আজ এতো সুন্দর একটা সময় পার
করলাম। আসলেই আপনারা অনেক ভালো। বিশেষ করে ভাবির
হাতের রান্নাটা।
আমি চলে গেলেও হয়তো এগুলো আমার মন থেকে
কখনো হারাবে না।”
কথাবার্তার এক পর্যায়ে আবরার বললো,”মা আমি আজকে নতুন
আংকেলের সাথে ঘুমাবো।”
নীলা বকা দিতে গেলে জাফর সাহেব বললেন,”থাকুক না আমার
সাথে,একটাদিনই তো।
আমারো ভালো লাগবে,আর রাতটাও কেটে যাবে আবরারের
সঙ্গে খুনসুটি করতে করতে।
আবরারকে জাফর সাহেবের সাথে পাঠিয়ে দিয়ে আমরা
আমাদের রুমে চলে আসলাম।
আমাদের রুমের ঠিক অপরপ্রান্তে জাফর সাহেবের থাকার
ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আবরার, জাফর সাহেবের রুমে আছে দেখে দরজার পাল্লা দুটি
এমনিতেই ভিজিয়ে রাখলাম।যাতে করে রাতে আবরারের
আসতে মন চায়লে সহজেই এই রুমে চলে আসতে পারে।
হঠাৎ করে হাল্কা বাতাসে দরজার পাল্লা দুটি নড়ে উঠাতে ঘুম
ভেঙ্গে গেলো আমার।
ঘুম ঘুম চোখে একটাবার দরজা দিয়ে সামনের রুমটাতে তাকাতেই
দেখলাম,সামনের রুমের দরজাটাও খোলা। রুমের ভিতরে
আলো জ্বলছে। হাতঘড়িটার দিকে তাকিয়ে সময়টাকে দেখে
নিলাম একটাবার, রাত দুটো বেজে ত্রিশ মিনিট।
এতো রাতে রুমে আলো জ্বলছে,তাহলে কি জাফর সাহেব
এখনো ঘুমায় নি?
আমি পানি খাওয়ার জন্য উঠে ডাইনিং এ গিয়ে ফেরার সময় রুমে
একটাবার উঁকি দিতেই দেখলাম,রুমে আবরার বা জাফর সাহেব
দু’জনেই কেউই নেই। ভাবলাম হয়তো বেলকনিতে আছে,
বেলকনিতে গেলাম,সেখানেও কেউ নেই। একে একে
পুরো বাড়িতে খুঁজলাম,আবরার আর জাফর সাহেব দু’জনের
কেউই নেই কোথাও।
মনের ভিতরে অজানা একটা ভয় চেপে বসলো।
নীলাকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে সদর দরজার
কাছে আসতেই হঠাৎ করে চোখ পড়লো রাস্তার ওপাশে থাকা
বাড়িটার দিকে।
উপরের বেলকনি দিয়ে আলোর রশ্মি ফিকে বের হয়ে
এসেছে খানিকটা।
জাফর সাহেব কি তাহলে ঐ বাড়িতে গিয়েছে আবরারকে নিয়ে।
কিন্তু এতোরাতে ঐ বাড়িতে কি কাজ থাকতে পারে তার,আর তাও
আবার আবরারকে সাথে নিয়ে।
তাহলে কি আবরার আজকেও আবার ঐ বাসার বেলকনিতে কাউকে
দেখেছে?
ভয়টা আরো গাঢ় হতে লাগলো।
কোনোকিছু না ভেবে দ্রুতগতিতে সেদিকে হাঁটা শুরু করে
দিলাম।
বাড়ির গেইটের তালা খোলা,গেইট সরিয়ে ভিতরে ছুটে গিয়ে
সদর দরজার সামনে এসে দাঁড়ালাম।
বাড়ির ভিতরে কে যেন গম্ভীরস্বরে একনাগাড়ে কিছু একটা পাঠ
করে চলেছে।
ভাষাগুলো অনেকটাই অস্পষ্ট।
দরজাতে হাত দিতেই দরজার পাল্লা দুটি দুদিকে ফাঁক হয়ে সরে
গেলো।
দরজা খুলে যেতেই চোখ কপালে উঠলো আমার।
ড্রয়িংরুমের মাঝখানে সারি সারি কতকগুলো কাঠ গোল করে
সাজানো মস্তবড় একটা অগ্নিকুণ্ডে আগুন দাউদাউ করে
জ্বলছে। আর অগ্নিকুন্ডের সামনে দন্ডায়মান একটা ভয়ংকর মুর্তির
পায়ের নিচে বসে আছে একজন তান্ত্রিক। পরণে লাল
কাপড়ের এক টুকরো পোষাক,বলতে গেলে অর্ধনগ্ন
অবস্থাতেই চোখ বন্ধ করে ধ্যানে মত্ত আছে সে।
কপালে লাল-সাদার তিলক লাগানো,গলায় ঝুলছে রুদ্রাক্ষের মালা।
আগুনের আঁচে মুখটা চিনতে খুব একটা কষ্ট হলোনা আমার।
লোকটা আর কেউ নয়,সকালে গাড়ি চড়ে আসা কোর্ট-টাই
পরিহিত সেই ভদ্রলোক, মানে এই বাড়ির মালিক জাফর চৌধুরী!!
একি এই ভদ্রলোক এই বেশভূষা কেন পরেছে,আর এইসবই বা
কেন করছে? আর এই ভয়ংকর মূর্তিটায় বা কোত্থেকে
এলো?
সেদিন যখন এসেছিলাম,তখন তো এসবের কিছুই ছিলো না
এখানে।
তাহলে কি বিকালে তখন কেনা-কাটার নাম করে এইসব জিনিসপত্র
কিনতে গিয়েছিলো লোকটা?
এতো প্রশ্নের মাঝেও যখন দেখলাম ভয়ংকর মূর্তিটার দু পায়ের
মাঝখানে আমার ছেলে আবরার অবচেতন অবস্থাতে পড়ে
আছে,তখন আর নিজেকে শান্ত রাখতে পারলাম না।
ছুটে গিয়ে ক্ষিপ্ত কণ্ঠে বললাম,”এইসব কি হচ্ছে? আর আমার
ছেলেকে এখানে কেন নিয়ে এসেছেন? একজন মুসলিম
হয়ে এ কার পূজা করছেন আপনি?”
লোকটা এবার চোখ খুলতেই ভিতরটা ধক্ করে উঠলো আমার।
চোখের মনি দুটো জলজল করে জ্বলছে তার আগুনের মত।
যেন জ্বলন্ত দুটো আগ্নেয়গিরি চোখের মনিতে বসানো
আছে।
আমি ভয় পেলেও দমে না গিয়ে ছুটে গেলাম আবরারকে
নেওয়ার জন্য।
সামনে বসে থাকা লোকটা এবার অকথ্য ভাষাতে গালি দিয়ে আমার
দিকে হাত বাড়াতেই আমি ছিটকে গিয়ে পড়লাম অগ্নিকুন্ডের
একপাশে।
ব্যাথায় ককিয়ে উঠে কোনরকমে আবার সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে
বললাম,”আমার ছোট্ট ছেলেটা কি ক্ষতি করেছে, তাকে কেন
নিয়ে এসেছেন এখানে?”
লোকটা বজ্রকণ্ঠে বলে উঠলো,”যেখানে স্বার্থ হাসিলের
জন্য নিজের মেয়েকে সমর্পণ করতে একটুও বুক কাপেনি
আমার,সেখানে তোর ছেলে আর এ এমন কি!!
শোন তাহলে, এখানে তুই আমাকে নিয়ে আসিস নি,বরং আমি
নিজে থেকে এসেছি তোর ছেলের জন্য। এই বাড়িতে ঠিক
এইখানে আমার মেয়েকে এভাবে বলি দিয়েছিলাম,আর আমার
স্ত্রী বাঁধা দিতে এসেছিলো দেখে তাকেও খুন করেছিলাম।
আর তারপর তাঁদের দু’জনকে উপরের ঘরের আলমারিতে
ঢুকিয়ে রেখে দোষ চাপিয়ে দিয়েছিলাম বাড়ির কেয়ারটেকার
সুমনের নামে। বেচারা খুব ভালো মনের মানুষ ছিলো,কিন্তু
আমার কাজে যে বাঁধা দিবে তাকেই যে মরতে হবে।
তাই ও বেচারাকেও মরতে হলো।
সবাই ভাবলো,আমার বউ-মেয়েকে নিয়ে সুমন ভেগে
গিয়েছে। আর আমিও নাটক বানিয়ে দেশ ছেড়ে চলে
গেলাম। এতোদিন তো আমার সবকিছু ভালোই চলছিলো,তবে
এখন যে আবার শয়তান মাকে সন্তুষ্ট করতে হবে।
আর তখনি তুই ফোন দিয়ে নিজের ছেলের বিপদ ডেকে
আনলি। আজকে তোদের দু’জনকে শয়তান মায়ের নামে বলি
দিয়ে আমার কার্যসিদ্ধি সাধন করবো। একসাথে জোড়া বোলি
পাবে মা আমার।”
বলেই হাসতে লাগলো লোকটা।
আমি সেদিকে ছুটে যেতে গেলেও যেতে পারলাম না।
মনে হচ্ছে কেউ যেন আমার পা দুটি শক্তকরে মেঝের
সাথে আটকিয়ে ধরে রেখেছে।
লোকটা একমনে মন্ত্র পড়তে লাগলো,আর অগ্নিকুন্ডের
ভিতরে ঘি আর ধুপ ছিটাতে লাগলো।
খানিকক্ষন মন্ত্র পড়ার পর আগুনের ভিতর থেকে একটা
ঝলসানো ছুরি বার করে দাঁড়িয়ে বললো,”মা তোর মনোবাসনা
পূর্ণ হউক সেই সাথে আমারো।
বলেই ছুরিটা আবরারের গলাতে চালাতে যাবে ঠিক তখনি একটা
চিৎকার দিয়ে উঠলো লোকটা।
তাকিয়ে দেখলাম,একজন মহিলা লোকটার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
চুলগুলা এলোমেলো হয়ে আগুনের উত্তাপে যেন ছড়িয়ে
ছিটিয়ে আছে চারদিকে।
বজ্রধ্বনিতে সেই নারীকণ্ঠ বলে উঠলো,”তুই নিজের
ইচ্ছাতে আসিস নি এখানে,তোকে আমি নিয়ে এসেছি।”
লোকটা এবার ভয়ে মুচড়ে গিয়ে বললো,”তুমি! না না এ কিভাবে
সম্ভব! তুমি তো মরে গিয়েছো,আমি নিজ হাতে তোমাকে খুন
করেছি।”
নারীকণ্ঠটা হেসে বললো,”ভয় পেওনা,তোমার না
আমাদেরকে ছেড়ে থাকতে ভিষণ কষ্ট হয়,তাই তো
তোমাকেও আমাদের সাথে নিয়ে যেতে এসেছি।
আদ্রিতাও যে অনেকদিন তাঁর বাবার আদর পায়নি। দেখো
দেখো তোমার মেয়েকে দেখো,তোমার আদর পাওয়ার
জন্য কতটা ব্যাকুল হয়ে আছে।”
কথাটা শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে সিড়ির দিকে তাকাতেই দেখলাম সেদিনের
সেই ছোট্ট মেয়েটা সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসছে।
গলাতে তীক্ষ্ম সুরির দাগ বসানো।
রক্তের কালচে ছাপে ভয়ংকর হয়ে আছে সেই দাগ।
মেয়েটা নেমে এসে জাফর সাহেবে কাছে গিয়ে
বললো,”বাবা যাবে না আমাদের সাথে। আমার যে তোমাকে ছাড়া
ভিষণ কষ্ট হয় থাকতে বাবা। যাবে না আমাদের সাথে?”
বলেই আরো কাছে এগিয়ে গেলো লোকটার।
জাফর সাহেব এবার প্রাণের ভয়ে পালাতে গেলে নিজেই পা
ফসকে গিয়ে জলন্ত অগ্নিকুন্ডের ভিতরে পড়ে গেলো।
দাউদাউ করে জ্বলতে থাকা অাগুন ধিরে ধিরে জাফরের শরীর
থেকে মাংস গুলোকে ঝলসে দিতে লাগলো।
জাফরের স্ত্রী আর মেয়ে দুজনে অপলক দৃষ্টিতে সেই
বিভীষিকাময় দৃশ্যটা যেন উপভোগ করছে।
জাফর আর্তনাদ করতে করতে একটা সময় জ্বলন্ত আগুনের
মাঝে হঠাৎ করে হারিয়ে গেলো।এই বিভীষিকাময় গা হীম করা
দৃশ্য যেন আমার চোখ আর নিতে পারছে না।
আমি ছুটে গিয়ে আবরারকে কোলে নিয়ে চলে আসতে
যাবো,তখন জাফরের স্ত্রী বলে উঠলো,”আপনাদের এই
কয়দিন অনেক কষ্ট দিয়েছি। আসলে আপনাদেরকে আমাদের
অস্তিত্বটাকে বুঝাতে চেয়েছিলাম। এতবছর সবার কাছে মিথ্যে
বদনাম নিয়ে মরে যাওয়ার পরও একমূহুর্ত শান্তিতে থাকতে পারিনি
আমরা মা-মেয়ে। যে মানুষটাকে আমি অন্ধ্যের মত
ভালোবেসেছিলাম,সেই মানুষটাই কিনা মানুষ নামের নরপিশাচ
ছিলো। লন্ডনের একটা ছোট্ট শহরে শয়তানের পূজা এখনো
চলে,নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য প্রতিবার একটা করে নবজাতক
শিশুর বোলি দিতে হয়। বিনিময়ে সে যায় চায় তাই পায়। আমার
স্বামীও লোভের তাড়নাতে এতটাই অন্ধ্য হয়ে গিয়েছিলো
যে শেষমেষ মুসলিম ধর্মের হওয়ার পরও শয়তানের পূজো
শুরু করে।
লন্ডনে কাজটা করা রিস্কি ছিলো,তাই সে ঠিক করে এইখানে
একটা বাড়ি বানিয়ে বাড়ির ভিতরেই সে এই কর্মকান্ড গুলো করবে।
আর বোলি শেষে মৃত লাশগুলো বাগানের কুয়োতে
ফেলে দিবে।কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পাবেনা। আর সেইজন্য
যখনি ওর কাউকে বোলি দেওয়ার প্রয়োজন পড়তো তখনি এই
বাড়িটাতে এসে একটা করে বোলি দিয়ে আবার ফিরে যেতো
আমাদেরকে নিয়ে। এসব দেখেও চুপ ছিলাম,শুধু ভালোবাসতাম
দেখে।
কিন্তু যখন শুনলাম,আমাদের নিজের মেয়েকে বোলি
দিবে,তখন আর মা হয়ে আমি চুপ থাকতে পারিনি। আর সেদিনের
সেই বাধা দেওয়াতেই একসাথে আমাকে আর আদ্রিতাকে খুন
করে ঐ নরপিশাচটা।
আমাদের দু’জনকে মেরে ঐ নরপিশাচটা আলমারিতে ঢুকিয়ে
রেখেছিলো। তিলে তিলে আমাদের শরীরটা পঁচে গলে
নষ্ট হয়েছে।
কাঠপোকা এসে খুবলে খুবলে খেয়েছে আমাদের
ফেলে যাওয়া শরীরের মাংসগুলা।
আর সেইজন্যই আমাদের মুক্তি হয়নি। তবে আজ থেকে আমরা
মুক্ত।
আজ থেকে আর কেউ আপনাদের বিরক্ত করবেনা। আমাদের
কাজ শেষ,আর কাউকে কখনো এ বাড়িতে দেখতে পাবেন না।”
“জাফর তার প্রাপ্য শাস্তি পেয়েছে। তবে মানুষ অর্থসম্পদের
মোহে পড়ে যে এতটা পিশাচ হয়ে যেতে পারে,তা এই
লোকটাকে না দেখলে কখনো জানতেই পারতাম না।
ঐ বদমাশ লোকটা আপনার সম্পর্কে এমনভাবে মিথ্যা গুজব
ছড়িয়েছে এলাকার মানুষের কাছে,যে কেউ শুনলেই সে
আপনাদেরকেই দোষারোপ দিবে। এমনকি আমি নিজেও প্রথম
শুনে আপনাকে কতকিছুই না মন্দ বলেছি। “
কথাগুলো বলে আবরারকে নিয়ে চলে আসছিলাম,এমন সময়
পিছন থেকে ছোট্ট মেয়েটা বলে উঠলো,”আমি কিন্তু
আবরারের সঙ্গে মাঝেমাঝে খেলতে আসবো।”
আমি ঘাড় ঘুরিয়ে হেসে বললাম,”এসো।”
তারপর আবরারকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসলাম।
নীলা এখনো ঘুমাচ্ছে,আবরারকে মাঝখানে রেখে
রোজকার মত আরেকপাশে আমি শুয়ে পড়লাম আমি।
পরদিন সকালে
“এই আশিক,জাফর ভাইয়া কোথায়?”
“তোমার জাফর ভাইয়া তো সেই ভোরে উঠেই চলে
গিয়েছে। কি যেন একটা কাজ পড়ে গিয়েছে,তাই আর থাকতে
পারলো না।”
“একটাবার বলে তো যেতো,আমি সারারাত ধরে কতকিছু ভেবে
রেখেছি,নতুন নতুন রান্না করবো বলে।”
বিড়বিড় করে বললাম,”
তুমি সারারাত রান্নার রেসিপি ভাবছিলে,আর আমরা বাপ ছেলে ভূতের
সাথে কুতকুত খেলছিলাম।”
“কি বললা?”
“কোই কিছু না তো,আচ্ছা জাফর নেই তো কি হয়েছে,একটাদিন
নিজের স্বামীকেই না হয় ভালো মন্দ রেঁধে খাওয়াও একটু।”
নীলা চোখ উল্টিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলে, আমি
আবরারের দিকে তাকালাম।
আবরার এখনো ঘুমাচ্ছে। ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরে
বললাম,”রাতে এতোকিছু ঘটে যাওয়ার পরও ছেলেটা কিভাবে
ঘুমাচ্ছে দেখো।”
কথাটা বলে আবরারকে জড়িয়ে ধরে আবার ঘুমালাম।
সমাপ্ত….


তো আজকে এই পর্যন্তই । মানুষ মাত্রই ভুল হয় । তাই ভুল হলে ক্ষমা করে দিয়েন । আশা করি পোস্টটি সবার ভালো লেগেছে । কোনো কিছু না বুঝতে পারলে কমেন্টে জানান । আপনি চাইলে এই লিংক এ ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে join করতে পারেন । আর যেকোনো প্রয়োজনে ফেসবুকে আমার সাথে যোগাযোগ করবেন ।



The post নিয়ে নিন চমৎকার একটা ভৌতিক গল্প [শেষ অংশ] appeared first on Trickbd.com.

নিয়ে নিন একটি চমৎকার ভৌতিক গল্প [প্রথম অংশ]

Posted:

Hello what’s up guys কেমন আছেন সবাই ? আশা করি ভালো আছেন । সবাইকে স্বাগতম আজকের একটি নতুন পোস্টে । টাইটেল আর thumbnail দেখে already বুঝে গেছেন আজকের টপিক কি । আশা করি পোস্টটি শেষ পর্যন্ত দেখবেন । তো বেশি কথা না বলে আজকের পোষ্ট শুরু করা যাক

ভৌতিক রহস্য গল্প

ওইখানে কে ?? ☠

পার্ট ০১

“বাবা বাবা দেখো ঐ বাড়ির আন্টিটা আমাকে ডাকছে।”
ছয় বছরের ছেলে আবরারকে নিয়ে বেলকনিতে বল ছোঁড়া
খেলছিলাম,হঠাৎ তাঁর কথাতে সেদিকে তাকালাম।আবরার আমাদের
বাড়ির ঠিক অপজিটে রাস্তার ওপাশে থাকা পরিত্যক্ত বাড়িটার দিকে তার
ডান হাতটা তুলে ধরে আছে।
আবরারের কথামত বাড়িটার দিকে তাকালাম,পুরো বাড়িটা ঘুটঘুটে
অন্ধকার।রাতে চাঁদের মিহি আলোতে আবছা ভাবে ঠিকমত
বাড়িটাকেই ঠাওর করা অসম্ভব,সেখানে আমার ছেলে একজন
নারীকে কিভাবে দেখলো?আর ও বাড়িতে তো কেউ
থাকেও না,বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সময় বাড়ির মালিককে একবার জিজ্ঞাসা
করাতে বলেছিলো,ও বাড়িতে কেউ থাকেনা।
রাতের অন্ধকারে কি দেখতে কি দেখেছে বাচ্চা ছেলে।
নিশ্চয় ভুল দেখেছে।
আমি আবারারের দিকে তাকিয়ে বললাম,”বাবা ওখানে কেউ
নেয়,আসো আমরা আবার খেলা করি।”
কিন্তু আবরার আর খেলাতে মনোযোগ দিলো না,বরং জানালার
গ্লাস ভেদ করে ঐ বাড়িটার দিকেই তাকিয়ে থাকলো ক্ষীণ
দৃষ্টিতে।
আমি কোনো উপায়ন্তর না দেখে আবরারকে নিয়ে রুমে
চলে আসলাম।
তারপর সবাই মিলে একসাথে রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়লাম।
পরদিন সকালে বাপ বেটা নাস্তা সেরে বেরিয়ে পড়লাম
একসাথে।আগের বাসায় থাকতে আবরারকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া
আর নিয়ে আসার জন্য একটা লোক রেখে দিয়েছিলাম।কিন্তু
এখন আর সেটার প্রয়োজন নেই।কারণ আমার অফিসে যাওয়ার
পথেই আবরারের স্কুল পড়ে।মূলত সেই জন্যই এই নতুন বাড়িটা
ভাড়া নেওয়া।এখান থেকে আমার আর আবরার দুজনেরই
যাতায়াতের সুবিধা।
সুতরাং আবরারকে স্কুলে আনা নেওয়া করার জন্য আলাদা
কোনো লোক বা আবরারের মা মানে আমার স্ত্রীকে
বেগ পেতে হবেনা এখন থেকে।
বাসা পরিবর্তন করার পর আজকেই প্রথম আবরারের স্কুল,তাই ও
বেশ হাসি খুশি মনেই রেডি হয়ে আমার সাথে বেরিয়ে
পড়লো।গাড়িতে ওঠার সময় একপ্রকার অনিচ্ছায় সামনের বাড়িটার
দিকে নজর পড়লো আমার।
বেশ বড়সড় একটা ডুপ্লেক্স বাড়ি,গেইটের ওপাশে সরু কংক্রিট
দিয়ে মোড়ানো রাস্তাটা সঠান বাড়ির আঙ্গিনা পর্যন্ত চলে
গিয়েছে একবারে। সরু রাস্তার দু পাশ জুড়ে অযত্নে বেড়ে
উঠেছে হরেকরকমের ফুলের গাছ সেই সাথে কিছু লতাপাতা।
জনমানবহীন শখের বাড়িটা আজ যত্নের অভাবে পরিত্যক্ত হয়ে
থাকলেও তার মান একটুও ক্ষুণ্ণ হয়নি এখনো,বরং সগৌরবে মাথা
তুলে দাঁড়িয়ে আছে দৈত্যের মত করে।
আবরারকে স্কুলে রেখে আমি আমার অফিসের উদ্দেশ্যে
রওনা দিলাম।
দুপুরের দিকে একটা জরুরি কাজ পড়ে যাওয়াতে নীলাকে
ফোন দিয়ে জানিয়ে দিলাম,সে যেন আবরারকে স্কুল থেকে
নিয়ে যায়।
কথামত ড্রাইভারকে বলে গাড়িও পাঠিয়ে দিলাম।
সন্ধ্যার একটু আগে ক্লান্ত শরীরে বাসায় ফেরার সময় আবারও
বাড়িটার দিকে চোখ পড়লো আমার।পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়া
সূর্যের রক্তিম আলোতে বাড়িটার সৌন্দর্যটাকে যেন আরও
বেশি করে ছড়িয়ে দিতে চায়ছে।
নিজের অজান্তে মনের ভিতরে একধরনের অস্বস্তিবোধ
হতে লাগলো আমার।
কেন জানি মনে হচ্ছে বাড়িটার সাথে আমার একটা অদৃশ্য টান
আছে। বাড়িটার প্রতিটা রন্ধ্রে রন্ধ্রে যেন আমাকে হাতছানি
দিয়ে ডাকছে বারবার।
কিন্তু এই বাড়িটাকে তো আমি কয়েকদিন হলো দেখছি,তাও আবার
এই নতুন বাড়িতে উঠার পর থেকেই।
এইসব ভাবতে রাস্তা পার হয়ে নিজের বাড়িতে ঢুকে পড়লো
আমার গাড়িটা।
ভিতরে গাড়ি প্রবেশ করতেই আবরার ছুটে এসে আবদার করে
বললো, “বাবা আমার চকলেট?”
আবরারকে দেখা মাত্রই হাতে থাকা ব্যাগ থেকে চকলেটের
বক্সটা বার করে ক্লান্তিময় মুখে হাসি ফুটিয়ে বললাম,”এইযে আব্বু
তোমার চকলেট।”
আবরার চকলেটের বক্স পেয়ে আবার খেলতে চলে
গেলো।দেখলাম আবরারের প্রায় সমবয়সী দু’জন ছেলে-
মেয়েকে আবরার আমার দেওয়া চকলেট গুলা ভাগ করে
দিচ্ছে।
শহর থেকে একটু ভিতরের দিকে হওয়াতে বাড়ির সামনে বেশ
খানিকটা জায়গা আছে,যা এখনকার বাড়িগুলাতে পাওয়ায় যায় না।
ব্যাগটা নীলার হাতে দিতে দিতে বললাম,”ওরা কারা?”
নীলা হেসে জবাব দিলো,”আমাদের প্রতিবেশির ছেলে-
মেয়ে।তোমার ছেলেকে তো ভালো করে চিনো
তুমি,ওর কথার যাদু দিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করে ফেলে।
আজকে পাশের বাসা থেকে দু’জন ভাবি এসেছিলো,তাঁদেরই
ছেলে-মেয়ে।
যাক ভালোই হলো,আবরারের তো দু’জন খেলার সাথি হলো কি
বলো?”
,
আমি শুকনো ঠোঁটে হেসে বললাম,”হুম,তবে এখন ভিতরে
নিয়ে চলো।সন্ধ্যা হয়ে এসেছে।”
বলেই আবরারের সাথে যে দু’জন খেলছিলো তাঁদেরকে
বললাম,”তোমরা আবার কালকে খেলো কেমন,আজকে সন্ধ্যা
হয়ে এসেছে।এখন তোমরা তোমাদের নিজ নিজ বাড়ি চলে
যাও।”
আমার কথামত ওরা দু’জন চলে গেলে আমিও আবরারকে নিয়ে
ভিতরে ঢুকে গেলাম।
আবরার ওর আদরমাখানো গলায় বলতে লাগলো,”জানো বাবা ওরা
না খুব ভালো।আমাকে আগে খেলতে দিছিলো।আমিও আমার
চকলেট ওদেরকে দিয়েছি,খুব ভালো করেছি না বাবা?”
আমি গাল টেনে একটা চুমু খেয়ে বললাম,”হুম খুব ভালো
করেছো।আমার বাবা কি খারাপ করতে পারে।”
তারপর আমি ফ্রেস হয়ে আসলে আবরার ওর নতুন বন্ধুদের
সম্পর্কে নানা রকম গল্প শোনাতে লাগলো আমাকে।ওর নতুন
বাড়ির সাথে বন্ধুদেরকেও খুব পছন্দ হয়েছে।
ছেলের এমন কথাতে কিছুটা আস্বস্ত হলাম,কারন ছোট বাচ্চারা
নতুন কোনো জায়গাতে গিয়ে যদি নিজেকে মানিয়ে নিতে না
পারে বা পছন্দ না হয় তাহলে বিপদের শেষ থাকেনা।
ধিরে ধিরে দিনের আলো একবারে হারিয়ে গিয়ে চারদিকে
অন্ধ্যকার নেমে আসলো।
রোজকার মত আজকেও আবরার বায়না ধরলো,বেলকনিতে
গিয়ে বল ছোঁড়া খেলবে আমার সাথে।
আমিও বাধ্য বাবার মত ছেলেকে নিয়ে বেলকনিতে গিয়ে বল
ছোঁড়া খেলতে লাগলাম।
রান্না ঘরে নীলা আর কাজের মাসি রান্না করছে,আর রান্না করার
সময়টুকু আমিই আবরারের এই বদ অভ্যেসটা করিয়েছি,যাতে রান্নার
সময় নীলাকে বিরক্ত না করে।
বল ছোঁড়ার এক পর্যায়ে আবরার বল হাতে নিয়ে আমার পিছনে
থাকা কোনো একটা জিনিসকে আগ্রহের সহিত দেখতে
লাগলো।
আমি বললাম,”বাবা বল দাও?”
আবরার ঠিক গতকালের মত করেই ডান হাতটা উচিয়ে বললো,”বাবা
ঐ আন্টিটা ডাকছে আমাকে।”
আমি আবরারের মুখে কথাটা শোনা মাত্রই পিছন ঘুরে তাকিয়ে
রাস্তার ওপাশে থাকা বাড়িটার দিকে তাকালাম।কিন্তু সেখানে ঘুটঘুটে
অন্ধ্যকারের মাঝে সগৌরবে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা পরিত্যক্ত
বাড়িটা ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়লো না আমার।
আমি আবরারের কাছে গিয়ে তাকে কোলে তুলে নিয়ে
বেলকনিতে একদম পিঠ ঘেষে দাঁড়িয়ে বাড়িটার দিকে তাকিয়ে
বললাম,”কোথায়, ওখানে তো কেউ নেই বাবা।”
আবরার আমাকে অবাক করে দিয়ে আবারও তার ডান হাতের একটা
আঙ্গুল দিয়ে কিছু একটা দেখানোর ভঙ্গি করে
বললো,”ঐযে,ওখানে একটা আন্টি দাঁড়িয়ে আছে,ইশারা করে
ডাকছে আমাকে!”
আমি ওর হাতের দিকে ভালো করে লক্ষ্য করলাম,ও ঠিক ঐ
বাড়িটার বেলকনিটাকে দউদ্দ্যেশ্য করে দেখাচ্ছে আমাকে।
কিন্তু আমি তো ওখানে কিছুই দেখতে পাচ্ছিনা।
আবরারের চোখের দিকে তাকালাম,সে বিস্ফিত চোখে
সেদিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
দেখে মনে হচ্ছে সে চোখের ইশারাতেই ও বাড়ির
বেলকনিতে থাকা কোনো একজনের সাথে কথপকথন চালিয়ে
যাচ্ছে।
আমি আর একমূহুর্ত না দাঁড়িয়ে সোজা রুমে নিয়ে চলে আসলাম
আবরারকে।
আবরার বার বার বলতে লাগলো,”বাবা আমি বেলকনিতে
খেলবো,ঐ আন্টিটাকে দেখবো।”
কিন্তু আমি ততোবারই আবরারকে অন্য কথা দিয়ে ভোলানোর
চেষ্টা করতে লাগলাম,কিন্তু বাচ্চারা কি আর সেটা বুঝে।
একসময় উপায় না পেয়ে ধমক দিতেই আবরার রান্না ঘরে কান্না
করতে করতে দৌড়ে পালালো।
এখন গিয়ে ঠিক নীলার কাছে আমার নামে বিচার দিবে।
সেটাই হলো,একটু পর নীলা রান্না করার খুনতি হাতে করে
বেরিয়ে আসলো।
আবরার তার পাশে দাঁড়িয়ে থেকে বললো,”মা বকা দিচ্ছো না
কেন,বকা দাও বাবাকে।”
নীলা মুচকি হাসিটাকে আটকে রেখে জোর গলাতে
বললো,”আমার আব্বুকে বকা দিছো কেন,তুমি খালি আমার
সোনামনিটাকে বকা দাও,আজকে তুমি বাহিরে ঘুমাবে এটাই
তোমার শাস্তি।কি এবার খুশি তো।”
আবরার মুচকি হেসে বললো,”হুম।”
রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে আবরার ঘুমিয়ে গেলে নীলা
ড্রয়িং রুমে এসে আমার পাশে বসলো,তারপর বললো,”সারারাত
টিভি দেখলে হবে?কাল সকালে তো সেই আমাকে আবার
টেনে তোলা লাগবে।চলো ঘুমাবে চলো।”
আমি নীলার দিকে তাকিয়ে বললাম,”আসলে আমি আবরারকে বকা
দিতে চাইনি,তবে একটা জিনিস কি জানো।আবরার যখন আমার সাথে
বেলকনিতে খেলা করে,তখন ও নাকি আমাদের সামনের বাসার
বেলকনিতে একজন মহিলাকে দেখতে পায়,আর সেই মহিলা নাকি
আবরারকে ইশারা করে ঐ বাড়িতে যাওয়ার জন্য ডাকে।”
“তুমিও না,বাচ্চামি করার স্বভাবটা আর গেলো না।”
“আরে সত্যি বলছি।গতকালকেও আবরার সেম কথা
বলেছিলো,আমি তখন চোখের ভুল ভেবে বিষয়টাকে
এড়িয়ে গিয়েছি।কিন্তু আজকে আমি যা দেখেছি,তা দেখে
মনে হচ্ছে আবরার সত্যি সত্যি ঐ বাড়িতে কোনো একজনকে
দেখতে পায়।আর সে আবরারকে ইশারা করে তার কাছে যাওয়ার
জন্য ডাকে।”
নীলা এবার আমার হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে বললো,”কিন্তু
ঐদিন না বাড়িওয়ালা বললো,ঐ বাড়িটাতে কেউ থাকেনা।মেলা বছর
ধরে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে বাড়িটা।”
“হুম,প্রশ্ন তো সেখানেই।ঐ বাড়িটাতে যেহেতু কেউ
থাকেনা,তাহলে আমাদের ছেলে ঐ বাড়িতে কাকে
দেখে,আর কেই বা তাকে ইশারা করে ঐ বাড়িতে আসতে
বলে,,,

নীলার দিকে আঁড়চোখে তাকালাম,ওর চোখে মুখে যেন
একধরনের অজানা বিভিষিকা চেপে ধরেছে। আমার ডান হাতটা শক্ত
করে চেপে ধরে যেন আমার ভিতরে ঢুকে যেতে চায়ছে
কোনো এক অজানা আতংকে।
আমি ওর হাতের উপর বাম হাতটা রেখে বললাম,”আরে তুমি তো
দেখছি রীতিমত ভয় পেয়ে গিয়েছো,আবরার ছোট মানুষ কি
দেখতে কি দেখেছে। আর ঐ বাড়িটা তো মেলাদিন ধরেই
বন্ধ হয়ে পড়ে আছে,তাহলে সেখানে মানুষ আসবে
কোত্থেকে?”
নীলা ভয়ার্ত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,”আশিক
তাহলে কি ঐ বাড়িতে কোনো ভূত থাকে?”
আমি তাচ্ছিল্যের সহিত হেসে বললাম,”আরে ধুর,কি বলো না
বলো। তুমিও দেখি এখনো সেই মুরুব্বিদের মত ভূত-
প্রেতে বিশ্বাস করে বসে আছো।ভূত-প্রেত বলতে কিছু
হয়না,ওগুলো তো শুধু লেখকদের কলমের আঁচড়ে গড়া কিছু
কাল্পনিক চরিত্র মাত্র।”
নীলা আর কিছু না বলে সোফা থেকে উঠে দাঁড়ালো,তারপর
বললো,”আবরার একা একা রুমে আছে। চলো রুমে চলো।”
আমিও আর কথা না বাড়িয়ে নীলার পিছন পিছন রুমে চলে আসলাম।
আবরার ঘুমাচ্ছে,দু পায়ের মাঝখানে কোল বালিশটাকে আঁকড়ে
ধরে ঘুমাচ্ছে।
ঠিক আমার মত হয়েছে ছেলেটা,আমিও ছোট থাকতে, না শুধু
ছোট থাকতে নয়, বিয়ের আগ পর্যন্ত আমার ঘুমের সাথি ছিলো
ঐ কোলবালিশটা। পরে বিয়ের পর নীলা আসলে সেটার আর
খাঁটে জায়গা হয়নি।
একদিন মজার ছলে নীলাকে বলেছিলাম,কোলবালিশটাকে
রেখে দিতে।
তখন নীলা বলেছিলো,সে তাঁর খাটে কোনো সতিন রাখতে
পারবে না।
কি এক আজব প্রানী এই নারী জাতি তাই না?
স্বামীর ভাগ কোলবালিশকেও দিতে চায় না।
কি আর করার, বউয়ের মান রাখতে গিয়ে বেচারা কোলবালিশের
জায়গা হলো সোজা খাট থেকে বাক্সের ভিতরে।
কথাটা মনে হতেই নিজের অজান্তেই মুচকি হাসলাম,তারপর রুমের
লাইট টা অফ করে দিয়ে আবরার আরেকপাশে গিয়ে সুয়ে
পড়লাম।
মাথার উপরে সিলিং ফ্যানটা বনবন করে ঘুরছে।
রাতে সবাই বিশ্রাম নিলেও এ বেচারার কোনো বিশ্রাম নেই।
অনেকের বাসায় শীতকালে একটু বিশ্রাম পেলেও আমাদের
বাসায় বারোমাসই তাকে ঘুরপাক খেতে হয়।
কারণ আমি আর নীলা দু’জনেই একরকম,যত শীতই আসুক না
কেন ফ্যান ছেড়ে কম্বল মুড়িয়ে ঘুমানোর অভ্যাস আমাদের।
ছেলেটাও হয়েছে আমাদেরই মত। সুতরাং শীতকালেও কম্বল
মুড়িয়ে ফ্যান ছেড়ে দেওয়াটা আমাদের পরিবারের
মুদ্রাদোষে দাড়িয়ে গিয়েছে এখন।
চাদরটা গায়ে টেনে একবার ওপাশে তাকালাম,ডিম লাইটের
আলোতে দেখলাম,নীলা চোখ বন্ধ করে সুয়ে আছে।
মনে হয় ঘুমিয়ে গিয়েছে।কিন্তু আমার কোনভাবেই ঘুম
আসছেনা।
বার বার আবরারের কথাগুলো মাথার ভিতরে ঘুরপাক খাচ্ছে।
ছেলেটা কি সত্যিই ও বাড়িতে কাউকে দেখতে পাচ্ছিলো
তখন!! আর আবরার যদি দেখতে পায় তাহলে আমি কেন পাচ্ছিলাম
না?আর যে বাড়িটা অযত্নে এতোদিন ধরে পড়ে আছে,সে
বাড়িতে হঠাৎ করে মানুষ আসবে কোত্থাকে? আজকে
বাড়িটাকে বাহির থেকে দেখেও তো নতুন কিছু মনে হয়নি।
একটাবার আগামীকাল সময় করে বাড়িটাতে ঢুকতে হবে।
হতেও তো পারে কেউ না কেউ লোকচক্ষুর আঁড়ালে ও
বাড়িতে বসবাস করছে।
কিন্তু আসপাশের কেউ তা জানে না। হ্যা আগামীকাল একটা বার ঐ
বাড়িটার ভিতরে ঢুকে দেখতে হবে,আদৈও কোনো মানুষ ঐ
বাড়িতে থাকে কি না।
এসব ভাবতে ভাবতে দু’চোখে তন্দ্রা নেমে আসলো।পরদিন
সকালে উঠে অফিসে যাওয়ার সময় রাস্তা পার হতেই ড্রাইভারকে
বাড়ির গেইটের সামনে গিয়ে গাড়িটা থামাতে বললাম।
গেইটে একটা মরিচাধরা তালা ঝুলছে,দেখে মনে হচ্ছে বিগত
কয়েকবছর এই তালাতে কেউ হাত পর্যন্ত রাখেনি।জানালার কাচ
নামিয়ে ক্ষীণ দৃষ্টিতে বাড়ির ভিতরের দিকটা দেখার চেষ্টা
করলাম।
বাড়ির সদর দরজাতেও ঝুলছে একটা তালা।
যেখানে দুটো গেইটে তালা ঝুলছে সেখানে এই বাড়িতে
কারো থাকার কোনো প্রশ্নই উঠেনা।
তারপরও বাড়িটার দিকে তাকালে কেন যানি ভিতরটা খচখচ করে
উঠছে।
যেন বিগত কয়েকবছর ধরে এই বাড়িটা তার রহস্য খুলে বলতে
চায়ছে কারো কাছে,কিন্তু তাঁর আর্তনাদ কারো কান পর্যন্ত
পৌঁছাতে পারছেনা।
“ড্রাইভার চলো।”
ড্রাইভার আমাদের কথামত গাড়ি চালাতো লাগলো।খানিকটা এগিয়ে
গিয়ে ড্রাইভার বললো,”স্যার একখান প্রশ্ন করুম,যদি আপনে কন
তো?”
আমি নড়েচড়ে বসে বললাম,”হ্যা বলো।”
“স্যার আপনে হঠাৎ কইরা বাড়িটার সামনে গাড়ি থামাইবার কথা কইলেন
যে কিছু কি হয়ছে?”
আমি ব্যাপারটা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য বললাম,”না তেমন কিছু না,আসলে
এতো সুন্দর একটা বাড়ি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে তো তাই
দেখার ইচ্ছে জেগেছিলো।”
“ওহ আইচ্ছা। তয় বাড়িটা কিন্তু ভালা না,এই বাড়ি নিয়া এলাকার মানসের
মুখে নানান রকমের কথা শুনা যায়।কেউ কেউ কয় এই বাড়িতে নাকি
ভূত-প্রেত বাস করে।”
আমি ধমক দিয়ে বললাম,”কি বলছো এসব,দেখছো না পাশে
ছোট বাচ্চা আছে।আর ওসব ভূত-প্রেতের ভয় অন্যকাউকে
দেখিও বুঝলে।এই তোমাদের মত লোকজনদের জন্যই এই
বিংশ শতাব্দীতে এসেও মানুষের মনে ভূত-প্রেতের ভয়
এখনো গেড়ে বসে আছে।
যত্তসব মূর্খের দল।”
আসতে করে কথাটা বলে,বললাম,”গাড়ি ছাড়ো।”
ড্রাইভার আর কিছু না বলে চুপ থাকলো।
লুকিং গ্লাসের দিকে তাকিয়ে দেখলাম,তাঁর মুখে চাপা হাসি,সে হাসি
কোনো সাধারণ হাসি নয়।যেন হাসির মাঝে হাজারো রহস্য
লুকিয়ে আছে।
সারাদিন অফিস শেষ করে বাসায় ফিরতেই রোজকার মত
আজকেও আবরার এসে চকলেটের আবদার করলো।
আমি সঙ্গে সঙ্গে ব্যাগ থেকে বক্সটা বার করে দিতেই
আবরার আবার ওর নতুন বন্ধুদের সাথে খেলাতে মনোযোগ
দিলো।
একবার সেদিকে তাকালাম,দেখলাম আজকে আবরারে খেলার
সঙ্গি আরও একজন বেড়েছে।একটা মেয়ে বাচ্চা,বাচ্চাটির
গায়ের রং দুধে ধোওয়া।
আমি হেসে বাড়ির ভিতরে ঢুকে নীলার হাতে ব্যাগটা দিতে
দিতে বললাম,”আমাদের ছেলে যেভাবে প্রতিদিন ওর বন্ধুর
সংখ্যা বাড়াচ্ছে,কিছুদিন পর দেখা যাবে আমাদের বাড়ির সামনের
দিকটা ছোট খাট একটা খেলার মাঠে পরিণত হয়েছে।
নীলা ব্যস্তভরে বললো,”আবার নতুন কাকে দেখলে তুমি?”
আমি জুতা খুলতে খুলতে বললাম,”কেন বাহিরে যে
দেখলাম,নতুন আরো একটা মেয়ে বাচ্চার আবরারের সঙ্গে
খেলা করছিলো।”
“নতুন বাচ্চা! কোথায় চলো তো দেখি।”
কথাটা বলেই নীলা বাহিরে এসে এদিক সেদিক তাকিয়ে ভিতরে
এসে বললো,”তুমিও না,তোমার মিছামিছি ভয় দেখানোর অভ্যাসটা
আর গেলো না।
কোথায় নতুন বাচ্চা? আবরারের সাথে তো গতকালকের ঐ বাচ্চা
দুজনই খেলা করছে।”
আমি খানিকটা থতমত খেয়ে দ্রুতগতিতে বাহিরে বের হয়ে এলাম।
এসে দেখি আবরারের সাথে গতদিনে ঐ দুজন বাচ্চা খেলা
করছে।
আমি তাদের দিকে এগিয়ে গিয়ে বললাম,”আবরার একটু আগে
তোমার সাথে নতুন আরেকটা মেয়ে বাচ্চা খেলছিলো, সে
কোথায় গেলো?”
আবরার খানিকটা বিরক্তি ভরে বললো,”কোথায় নতুন মেয়ে
বাবা,আমি তো এদের সাথেই খেলছি। আজকে কিন্তু সন্ধ্যা
নামতে এখনো অনেক দেরি আছে,আমি এখনো খেলবো
তুমি কিন্তু নিয়ে যাবে না আমাকে।”
আমি বেশ খানিকটা অবাক হয়ে পাশের দু’জন বাচ্চাকে জিজ্ঞাসা
করলে তারাও একই কথা বললো।তারা কোনো মেয়েকে
দেখেনি এখানে।
তাহলে আমি যে স্পষ্ট দেখলাম,আবরার আমার থেকে
চকলেটের বক্সটা নিয়ে সোজা ঐ মেয়েটার হাতে দিলো।
একটু চারপাশে তাকাতেই দেখলাম,আবরারের পাশেই
চকলেটের বক্সটা পড়ে আছে।তাহলে কি আমি ভুল
দেখলাম,কিন্তু এতবড় চোখের ভ্রম হওয়ার কথা তো নয়,আমি
তো দিব্যি সুস্থ্য মস্তিষ্কে একটা বাচ্চা মেয়েকে দেখতে
পেলাম,সে আবরারের সঙ্গে খেলছিলো।
মাথাটা প্রচন্ড ধরেছে,আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছি না।দ্রুত ভিতরে
ঢুকে গেলাম।তাহলে
নিজের চোখের ভুল এসব,সারাদিন আজগুবি সব চিন্তাভাবনার কারনে
হয়তো ভুল দেখেছি।দ্রুত জামা কাপড় ছেড়ে সাওয়ার নিয়ে
নিলাম।
সারাদিনের অফিসের ক্লান্তি আর সকালের ড্রাইভারের উদ্ভট কথা-
বার্তায় আমার মাথা খারাপ করে দিয়েছিলো।
এখন বেশ হাল্কা লাগছে নিজেকে।
সন্ধ্যার একটু আগেই আবরারকে ওর মা ভিতরে নিয়ে আসলো।
আজকে রান্নার মাসি আসবে না বলে গিয়েছে।সুতরাং এই দীর্ঘ
সময়টা আবরারকে ম্যানেজ করার দায়িত্বটা সম্পুর্ণ আমার ঘাড়ে
এসেই পড়লো।
ছেলের হোমওয়ার্ক শেষ করতে করতে রাত প্রায় নয়টা
বেজে গেলো।আজ ইচ্ছে করেই একটু বেশি সময়
লাগিয়েছি হোমওয়ার্ক করাতে গিয়ে।যাতে করে রাতে
বেলকনিতে গিয়ে খেলার বায়না না করতে পারে ছেলেটা।
নীলার রান্নার কাজ শেষ হয়ে গেলেই সবাই মিলে রাতের খাবার
খেয়ে নিলাম।আগামীকাল শুক্রবার,আমার অফিস ছুটি।আর ছুটির
আগের দিন রাতে আমি একটু রাত বাধিয়েই ঘুমায়।
কারণ সপ্তাহে এই একটা দিন আমি ইচ্ছেমত টিভি দেখতে পারি।
তবে আজকে কেন যানি টিভি দেখতে ইচ্ছে করলো না।
খাওয়া দাওয়ার পর কিছুক্ষণ গল্পগুজব করে আবরার ঘুমিয়ে পড়লে
আমরা দু’জনেও তার দুপাশে সুয়ে পড়লাম।
হঠাৎ করে কারো চিৎকারের শব্দে বিছানা ছেড়ে উঠে বসে
পড়লাম মাঝরাতে।
আবরারের ওপাশটা খালি,
মুখ দিয়ে স্ব স্পষ্টে বেরিয়ে আসলো,” নীলা কোথায়?”
বিদ্যুতের বেগে রুম ছেড়ে বাহির হতেই দেখলাম,নীলা ডাইনিং
টেবিলের একপাশে অবচেতন হয়ে পড়ে আছে।
আমি সেদিক ছুটে গিয়ে টেবিলের উপর থাকা জগ থেকে পানি
ঢেলে নীলার চোখে ছিটকে মারতেই নীলার হুশ ফিরে
আসলো।
নীলা আমাকে দেখা মাত্রই শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে শক্ত
করে চেপে ধরে কাঁপতে লাগলো।
আমি তাকে অভয় দিয়ে বললাম,”কি হয়েছে তোমার,ঠিক আছো
তো তুমি?আর এভাবে চিৎকার দিয়ে উঠলে কেন?”
নীলার মুখ দিয়ে কথা বার হতে বেশ কিছুক্ষণ সময় লাগলো।
খানিকটা সময় চুপচাপ থেকে ডুকরে কেঁদে উঠে
বললো,”আশিক, আমি এ বাড়িতে থাকবো না।এ বাড়িতে ভূত
আছে।”
আমি নিজেকে শান্ত রেখে নীলাকে অভয় দিয়ে বললাম,”কি
বলছো এসব?ভূত কোত্থায় দেখলে আবার।চলো তো
রুমে চলো।”
নীলাকে ধরে রুমে নিয়ে এসে খাটের উপর বসালাম।
তারপর বললাম,”এখন বলো তো কি দেখে ওমনভাবে চিৎকার
দিয়ে উঠলে?”
নীলা কয়েকটা ঢোক গিলে বললো,”একটু পানি খাবো।”
আমার পাশে থাকা পানির বোতলটা দিয়ে বললাম,”নাও।”
নীলা ঢকঢক করে বোতলের পুরো পানিটা পান করে কিছুক্ষণ
দম নিয়ে তারপর বললো,”আমি ঘুম থেকে উঠে পানি পান করার
জন্য ড্রইংরুমে গিয়েছিলাম।
তারপর ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি বার করে যেই না ফ্রিজের দরজা
আটকাতে যাবো ঠিক তখনি….
“তখনি কি?”
“তখনি আমি একজন বিদ্ঘুটে চেহারার মহিলাকে দেখতে পাই।ঠিক
আমার একদম চোখের সামনে।মুখটা ভয়ংকর, ফ্যাকাসে।দেখে
মনে হচ্ছিলো যেন কেউ ওর শরীর থেকে সমস্ত রক্ত
শুষে নিয়েছে।
মেয়েটার চোখের ভিতর কোনো মনি ছিলো না,মনির কালো
অংশের পরিবর্তে কেউ যেন সাদা চুনের প্রলেপ লাগিয়ে
দিয়েছে।”
“কি বলছো এসব পাগলের মত,আমি তো তোমার চিৎকার শুনে
ছুটে গিয়ে কিছুই দেখতে পেলাম না।”
“আমি কিছু জানি না,আমি আর এই বাড়িতে থাকবো না।নিশ্চয় এই
বাড়িতে কোনো ঝামেলা আছে।আর সেইজন্যই এত বড় বাড়িটা
বাড়িওয়ালা কম টাকা দিয়ে ভাড়া দিয়েছে।তুমি তো নিজেও
গতকালকে বলছিলে আবরার কাকে যেন দেখেছে সামনের
বাড়িতে।
নিশ্চয় ঐ মহিলায় এসেছিলো।
এ বাড়ি ছেড়ে দাও,মহিলাটা নিশ্চয় আমাদের ছেলের কোনো
ক্ষতি করতে চায়ছে।”
আমি নীলাকে বুকের উপর নিয়ে বললাম,”এখন ঘুমাও।সকাল
হোক তারপর চিন্তা করে দেখা যাবে।”

নীলাকে বুকের উপর নিয়ে এক প্রকার অনিচ্ছাসত্ত্বেই তাঁর বলা
কথাগুলো একমনে আওড়াচ্ছি।
নীলা হয়তো মিথ্যা বলেনি,প্রথমে আবরার তারপরে আমি আর
একটু আগে নীলা।
তবে কি সত্যিই আমাদের উপর কারো কুনজর পড়েছে?
ধ্যাত এসব কি ভাবছি আমি,ভূত-প্রেতে অবিশ্বাস না করা আমিই কিনা
এখন এসব নিয়ে সারাক্ষণ পড়ে আছি।
হয়তো এগুলো সত্যিই হচ্ছে।তবে এসব কোনো অদৃশ্য
শক্তির বলে নয়,বরং কোনো মানুষের দ্বারায় পূর্বপরিকল্পিত
ভাবেই এসব হচ্ছে।
কিন্তু কে করছে,আর কেনই বা করছে?
এখানকার তো তেমনভাবে কেউ আমাদের ঠিকঠাক মতো
চিনে পর্যন্ত না।তাহলে কেউ কেন মিছামিছি ভয় দেখাতে এসব
করবে?
তাহলে কি সত্যি ঐ বাড়িটাতে লোকচক্ষুর আঁড়ালে কেউ থাকে?
আমাকে জানতেই হবে,এ বাড়ি ছেড়ে দিলেও এসব কিছুর রহস্য
উদ্ঘাটন করার পর তবেই যাবো।
আগামীকালই আমি ঐ বাড়িটাতে যাবো,হ্যা আমাকে যেতেই
হবে।
এসব ভাবতে ভাবতে ক্লান্ত শরীরের ঘুম নেমে আসলো।
সকালে নীলার ডাকে ঘুম ভেঙ্গে চোখ মেলে তাকালাম।
বেশ স্বাভাবিক লাগছে নীলাকে,বরং অন্যদিনের চায়তে
আজকে আরো বেশি মুক্তমনা দেখাচ্ছে তাকে।
আমার দিকে চায়ের কাপটা বাড়িয়ে দিয়ে বললো,”কি দেখছো
ওমন করে,নতুন বউ না আমি,ওভাবে দেখার কিছু নেই। কাপটা ধরে
আমাকে উদ্ধার করো। রান্না বসিয়ে এসেছি।”
অমনোযোগের সাথে হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে কাপটা ধরলাম।
নীলা আঁড়চোখে তাকিয়ে মুচকি হেসে রুম থেকে
বেরিয়ে গেলো।আমি ফ্যালফ্যাল চোখে নীলার প্রস্থান
হওয়া দেখলাম।
ভারি অদ্ভুত তো,রাতে যে মেয়েটার চোখ-মুখে গভীর ভয়
গেঁড়ে বসেছিলো, সেই মেয়েটাকে দেখে এখন কিচ্ছুটি
বুঝবার উপায় নেই।এমন একটা ভাব করে চায়ের কাপটা দিয়ে
গেলো,যেন গতরাতে কিছুই হয়নি।সে কিছুই যানে না!
নীলা কি তাহলে বিষয়টাকে এড়িয়ে যেতে চায়ছে?
আমি চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে রুম থেকে বের হলাম।
আবরার ড্রইংরুমে বসে বসে কার্টুন দেখছে।আমাকে
দেখে ফিক করে হেসে আবার কার্টুন দেখাতে
মনোযোগ দিলো।
আমি ড্রইংরুম পার করে রান্নাঘরের দিকে এগিয়ে গেলাম।
নীলা একা হাতে পুরো রান্নাঘর সামলাচ্ছে।একবার চুলাতে তো
একবার সবজি কাটাতে ব্যস্ত।
আমি দরজার মুখে দাঁড়িয়ে বললাম,”মাসি আসেনি?”
নীলা ব্যতিব্যস্ত হয়ে উত্তর দিলো,”না,মাসির ছেলের নাকি
নিউমোনিয়া হয়েছে,গ্রামের বাড়িতে গিয়েছে।ফিরতে
কয়েকদিন লেগে যাবে বললো ফোন দিয়ে।”
“তাহলে আরেকজনকে দেখবো?”
নীলা এবার আমার দিকে তাকিয়ে বললো,”কয়েকদিনের জন্য
খামখা কেন আরেকজনকে রাখতে যাবো।কয়েকদিনেরই
তো ব্যাপার, আমি ঠিক সামলিয়ে নিবো।যে ভারি দুজন মানুষের রান্না
করা।”
“আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে,আচ্ছা শুনো বলছিলাম কি সামনের
মোড়ে একটা ভালো বাড়ির খোঁজ পেয়েছি এইটার চায়তে
বেশ ভালো।আমি চিন্তা করছিলাম সামনের মাস থেকে ঐ বাড়িতে
উঠে যাবো,কি বলো তুমি?”
নীলা এবার খানিকটা বিরক্ত হয়ে বললো,”দুদিন পর পর বাড়ি পরিবর্তন
করতে তোমার ভালো লাগলেও আমার মোটেও ভালো
লাগে না। তোমার আবার কি,বাড়ি ভর্তি ফার্নিচার,আর জিনিসপত্র তো
তোমাকে সামাল দিতে হয়, লোক দিয়ে মালপত্র গাড়িতে
উঠিয়ে আবার নতুন জায়গাতে গিয়ে নামিয়ে নাও।
বাকি কাজগুলো তো সব আমাকেই করতে হয়।আর এ বাড়িটা কি
এমন খারাপ,বেশ তো নিরিবিলি, ছিমছাম আর ভাড়াটাও কম। আর তাছাড়া
আবরারেরও খুব পছন্দ হয়েছে বাড়িটা।এক বছরের আগে তো
ভুল করেও বাড়ি বদলানোর নাম মুখেও নিবে না তুমি, এই বলে
দিলাম।”
নীলার কথাগুলো শুনে বেশ খানিকটা অবাক হলাম আমি,মেয়েটা
বলে কিরে!! গতরাতে যে পারলে তখনি বাড়ি ছেড়ে
পালাচ্ছিলো সে এখন বলে কিনা একবছরের আগে এ বাড়ি
ছাড়লে আমার খবর আছে।
আমি এবার বললাম,”গতরাতের কথা কি সব ভুলে গিয়েছো?”
নীলা চোখ দুটি বড় বড় করে বললো,”কি কথা?”
“আরে আজব তো,এমন একটা ভাব করছো যেন কিছুই জানো
না।গতরাতে যেন তোমার সাথে কিছুই হয়নি?”
“কি হবে আমার। এই তুমি ঠিক আছো তো?”
“আমি ঠিক আছি,তোমার মাথাতে গন্ডগোল হয়েছে।গতরাতে
তুমি কি না কি দেখে চিৎকার করে জ্ঞান হারিয়ে ফেলার পরে
আমি ছুটে গিয়ে পানি ছিটিয়ে জ্ঞান ফেরালে তুমিই তো কাঁদো
কাঁদো কন্ঠে বললে,” এই বাড়িতে ঝামেলা আছে,এই বাড়িতে
আর থাকবে না।আর রাত শেষ হতে না হতে সবকিছু ভুলে
গেলে?”
নীলা এবার খুনতিটা হাতে নিয়ে এগিয়ে এসে বললো,”সকাল
সকাল মশকরা করবা না একদম,কয়দিন ধরে দেখছি তুমি আজগুবি সব
কথাবার্তা বলে আমাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছো।আমি
গতরাতে বাহিরে কখন গেলাম,আর জ্ঞান হারালাম কখন?
আমি তো ঘুমিয়ে ছিলাম।দেখো ভুলভাল বকে একদম মাথা খারাপ
করাবে না।এমনিতেই মাসি আসেনি,একা হাতে সবকিছু করতে হবে।
যাও তো তুমি,আরেক কাপ চা নিয়ে যাও।
খেয়ে যদি মাথাটা খুলে।”
আমি আর কিছু বললাম না,চায়ের কাপটা রেখে চলে আসলাম।
নীলা এসব কি বলছে!! গতরাতে তাহলে আমি যেসব
দেখলাম,সেগুলো কি সব স্বপ্ন ছিলো? কিন্তু স্বপ্ন এতটা
বাস্তবিক হয় কিভাবে?
সকালের নাস্তা শেষ করে কাজের নাম করে বাহিরে বেরিয়ে
পড়লাম।আসলে ঐ বাড়িটাকে একটাবার ভালো করে দেখার
দরকার।নিশ্চয় ঐ বাড়িতে এমন কেউ আছে,যে এগুলো
করাচ্ছে।
বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তার এপাশে এসে থমকে দাঁড়ালাম।
বাড়ির মেইন গেইটে যেহেতু তালাবন্ধ,তাই প্রাচীর টপকিয়ে
ভিতরে ঢুকলাম সাবধানে,যাতে কেউ টের না পায়।
এমনিতেও এই তল্লাটে গোটাকয়েক বাড়ি,আর বসবাসকারী
মানুষগুলাও তেমন জরুরী কাজ ছাড়া খুব একটা বাড়ির বাহিরে বার হয়না।
প্রাচীর টপকিয়ে এগিয়ে যেতে লাগলাম বাড়ির সদর দরজার
দিকে।
ছোট ছোট গাছ আর ঘাসের উপরে এখনো ভোরের শিশির
লেপ্টে আছে।বাড়ির বাগানটা দেখে তো মনে হচ্ছে
দীর্ঘ কয়েক বছরের ভিতরে এ বাড়িতে কোনো মানুষের
পা পড়েনি।
ধিরে ধিরে সদর দরজার দিকে এগিয়ে গিয়ে দেখলাম একটা
মজবুত তালা সদর দরজার দুপাশকে আবদ্ধ করে রেখেছে।
যাকে বলে বিনা পারিশ্রমিকে দারোয়ানের দায়িত্ব পালন করা।
তালা ভাঙ্গতে গেলে যদি শব্দ হয়ে এলাকাবাসী জেনে
যায়,তাহলে তখন পড়বো আরো ঘোর বিপদে।হাজারো
প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে তখন।
ভাবলাম কোনো জানালার গ্লাস ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকবো।
যেই ভাবা সেই কাজ,সদর দরজা ছেড়ে বাড়ির চারপাশ ঘুরতে
লাগলাম।
জানালার গ্লাসগুলোতে এত পরিমান ধুলো জমেছে যে হাত না
দিলে ভিতরের কোনোকিছু দেখা প্রায় অসম্ভব।
ঘুরতে ঘুরতে বাড়িটার পিছনের দিকে গেলে দেখলাম,একটা
জানালার গ্লাস খানিকটা ভেঙ্গে গিয়েছে।
সেই ভাঙ্গা অংশের ভিতরে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে জানালার লক খুলে
সহসাই ভিতরে ঢুকে গেলাম।
ভিতরে দমবন্ধ করা গুমট বেঁধে আছে,বাহিরে সূর্যের আলো
থাকলেও গ্লাসের গায়ে জমাট বেঁধে থাকা ধুলোর কারণে
ঠিকমত আলো ভিতরে ঢুকতে পারছে না।
আবছা আলোতে একটাবার চারপাশটা ভালো করে দেখে নিলাম।
আমি এখন যেখানে দাঁড়িয়ে আছি সেইটা এই বাড়ির কিচেন।
মেঝেতে ধুলোর মোটা আস্তরণ জমে গিয়েছে।
ধিরে ধিরে এগিয়ে গিয়ে ড্রয়িংরুমে এসে থমকে দাঁড়ালাম।
জিনিসপত্র বেশ গোছানো থাকলেও সেগুলো এখন যত্নের
অভাবে ব্যবহারের অনুপযোগী।মাকড়সার জাল আর ধুলোতে
পুরো ঘরটা ছেয়ে আছে।
এতো স্বাধের বাড়িটা আজ যত্নের অভাবে কি বেহাল দশাটায় না
হয়েছে। কিন্তু একটা সময় তো ঠিকি এই বাড়িটাতে হাসির রল
পড়তো,স্বপ্ন বুনতো কেউ কেউ।
ড্রইংরুমে দাঁড়িয়ে আরো একবার ভালো করে চারপাশটা দেখে
নিলাম,দেখে তো মনে হচ্ছে বহুদিন ধরে এ বাড়িতে
কোনো জনমানবের ছায়া পর্যন্ত পড়েনি।
তাহলে কেউ এ বাড়িতে থাকবে কিভাবে?
একজন মানুষ নিশ্চয় এতোটা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকবে না।
বাড়ির রুম গুলোতে ঢুকার ইচ্ছা থাকলেও তা সম্ভব হলো না,কারণ
প্রতিটা রুমের দরজা লকড করা আছে।শুধু একটা রুম বাদ দিয়ে।
যেটা খোলা ছিলো সেইটার দরজা কিছুটা ফাঁক করে বুঝলাম এই
রুমটা এ বাড়ির স্টোররুম।ভিতরে ভাঙ্গা-চোরা আর অব্যবহৃত কিছু
জিনিসপত্র পড়ে রয়েছে।অবশ্য এখন এ বাড়ির সবকিছুই
অব্যবহৃত।
বাড়িটা দোতলা,নিচের তলাতে একটা মাস্টার রুম,একটা স্টোররুম
আর একটা কিচেন সেই সাথে বৃহদাকার এই ড্রইংরুমটা।
ড্রইংরুমের একপাশ দিয়ে সরু হয়ে উপরে ওটার জন্য উঠে
গিয়েছে আঁকাবাঁকা কাঠের একটা সিড়ি।সেটাতেও মোটা ধুলোর
স্তুপ জমে আছে।ধিরে ধিরে এগিয়ে গিয়ে সিড়িতে পা
রাখতেই শরীরের ভিতরে অজানা একটা হিমশীতল পানির
স্রোত খেলে গেলো শিরদাঁড়া বেয়ে।
একটা অদ্ভুত শব্দে থমকে দাঁড়ালাম।
শব্দটা স্টোর রুম থেকে আসছে।
কানদুটো সজাগ করে চুপচাপ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে শব্দটা
ভালো করে বুঝবার চেষ্টা করলাম।
কেউ যেন গোঙ্গানি দিচ্ছে,কিন্তু আমি তো একটু আগেও
যখন দরজা খুলেছিলাম তখন ভিতরে ভাঙ্গাচোরা আসবাবপত্র ছাড়া
কিছুই ছিলো না। পা টিপে টিপে আবার স্টোররুমের দিকে
এগিয়ে গেলাম।
দরজার এপাশ থেকে কান পেতে শব্দটা ভালোমত বুঝার চেষ্টা
করলাম।
মনে হচ্ছে দরজার ওপাশে কেউ শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থাতে ছটফট
করছে।
সাতপাঁচ না ভেবেই দরজার হাতল ধরে টান দিলাম।
ক্যাচ কুঁচ শব্দ করে দরজাটা খুলে গেলো।
পকেট থেকে ফোনটা বার করে টর্চ ফেললাম,না কেউ
ভিতরে নেই।
টর্চের আলো এদিক সেদিক ভালো করে ফেলতেই
দেখলাম দৈত্যকার কয়েকটা বিলেতি ইঁদুর আসবাবপত্রের উপরে
ছোটাছুটি করছে।অনেকদিন পর দরজা খোলাতে মনে হয়
তাঁদের সুখের সংসারে ব্যাঘাত ঘটেছে কিছুটা।
নিজেই নিজেকে বিলাপ দিতে লাগলাম,সামান্য ইঁদুরের ভয়ে হাঁটু
কাপা শুরু করে দিয়েছিলো যার,সে আবার এসেছে রহস্যের
উদ্ঘাটন করতে।
স্টোররুমের দরজা টেনে দিয়ে আবার সিড়ির দিকে এগিয়ে
গেলাম।সিড়িতে পা দিতেই কানে এলো উপর থেকে পায়ে
হাঁটার খটখট শব্দ। চুপচাপ খানিকক্ষন দাঁড়িয়ে থাকলাম,শব্দটা কয়েক
মূহুর্তের জন্য হয়ে আবার থেমে গেলো।
নিশ্চয় ব্যাটা উপরে আছে,আমার উপস্থিতি টের পেয়ে ধরা পড়ার
ভয়ে পালাবার চেষ্টা করছে এখন।
তাড়াহুড়ো করে উপরে উঠে গিয়ে আরো বেশি অবাক হলাম।
নিচের তুলনাতে উপরে আরো বেশি ধুলোর আস্তর জমে
আছে।একদম নিখুঁত ভাবে কোনোরকম খুঁত ছাড়াই ধুলো দিয়ে
আস্তরন বিছানো পুরোটা ফ্লোর জুড়ে।
আমি পায়ের ছাঁপ পরিক্ষা করার জন্য কয়েক পা এগিয়ে গিয়ে পিছন
ফিরে তাকালাম। মেঝের উপরে আমার জুতার ছাপ বসে
রয়েছে। তাহলে একটু আগে যে হাঁটার শব্দটা আসছিলো তাঁর
পায়ের ছাপ কোথায় গেলো?
নিশ্চয় কোনো রুমের ভিতরে হবে। উপরের তলায় তিনটা রুম।
একটা ছোট আর দুটো মাস্টার বেডরুম হবে সম্ভবত। একে
একে গিয়ে সবকয়টার হাতল ধরে মোড়া মারলাম, একটা রুম
খুললো বাকি দুটো লকড করা।
ভিতরে ঢুকলাম,মাস্টার বেডরুম। বেশ বড়সড়।
রুমের ভিতরে একটা বেড একটা ড্রেসিংটেবিল আর একটা
ওয়ারড্রব ছাড়া আর কিছুই নেই।
সেগুলোর অবস্থাও বড্ড নিদারুণ।
ধুলোর স্তর জমে দামি আসবাবপত্র গুলো তার আভিজাত্য
খোয়াতে বসেছে।
রুমের বাহিরে তাকিয়ে দেখলাম বেশ বড় সড় একটা
বেলকনি,এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলতেই চোখে পড়লো
আমাদের বাড়িটা।
তাহলে হয়তো এই বেলকনিটাতেই আবরার কাউকে দেখার কথা
বলেছিলো?
কিন্তু কেউ থাকলে তো তাঁর পায়ের ছাপ থাকতো,আর বেলকনি
দেখেও তো মনে হচ্ছে এখানে বহুদিন কারো স্পর্শ
পড়েনি।
সব আমার মাথার সমস্যা,এসে থেকেই এই বাড়িটা নিয়ে এতটাই
ভেবেছি যে, যে যা বলেছে সেটা নিয়ে ভাবতে শুরু করে
দিয়েছি।
আজকাল তো কতই পরিত্যক্ত বাড়ি পড়ে আছে,মানুষজনেরও
খেয়ে দেয়ে কাজ নেই একটা পরিত্যক্ত বাড়ি দেখলেই
হয়ছে, নানান গুজব রটিয়ে এলাকা বাসির মনে ভয়ভীতি ঢুকিয়ে
দিবে।
মনটা এখন বেশ হাল্কা লাগছে,নিজে সঠিক এটা ভেবে।ভূত
প্রেত বলতে কিছু নেই।সবকিছু মানুষের বানানো রটনা মাত্র।
বেলকনির দরজা দিয়ে রুমের ভিতর দিয়ে বের হওয়ার সময় হঠাৎ
করে চোখ আটকে গেলো দেওয়ালে ঝুলতে থাকা একটা
ফটোফ্রেম দেখে।
একটা ফ্যামিলি ফটোফ্রেম,এক ফ্রেমে তিনজন আবদ্ধ হয়ে
আছে।
বাবা-মা আর তাঁদের ছোট্ট একটা মেয়ে।
মেয়ে!! মেয়েটার চোখ দুটো দেখে খানিকটা খটকা
লাগলো আমার।
এই চোখ দুটো কোথায় যেন দেখেছি আমি।
তবে ধুলো পড়ার কারণে মুখটা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছিনা।
এগিয়ে গিয়ে ফ্রেমটা নামিয়ে বাচ্চা মেয়েটার উপর থেকে
ধুলো ঝেড়ে ফেলে দিতেই হৃদপিণ্ডটা যেন একমুহূর্তের
জন্য কেঁপে উঠলো আমার!!
হাত থেকে ফ্রেমটা পড়ে গিয়ে কাচ ভাঙ্গার শব্দে ঝনঝন
করে উঠলো পুরো বাড়িটা।
মেঝের উপরে পড়ে থাকা ফ্রেমের বাচ্চা মেয়েটা আর
কেউ নয়,গতকাল বিকেলে অফিস থেকে ফেরার সময়
আবরারের সাথে যাকে খেলতে দেখেছিলাম এটা সেই
মেয়েটা!! ঠিক একইরকম ভাবে হাসছিলো, যেভাবে এই
ফ্রেমের ভিতরে হাসছে!! তাহলে কি এই মেয়েটাকেই
আবরার দেখতে পায়,কিন্তু আবরার তো বলেছিলো তাকে
একজন আন্টি ইশারা করে ডাকে।
আর বাড়িওয়ালার কথামত যদি এ বাড়িটা দশ বছরের বেশি সময় ধরে
পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে থাকে,তাহলে এতো বছর পরও মেয়েটা
একইরকম থাকে কিভাবে? কোনোকিছু আর ভাবতে
পারছিনা,আমাকে এখন বের হতে হবে।
ফ্রেমটাকে ফেলে রেখে দ্রুত হাঁটা শুরু করে দিলাম।নিশ্চয়
কোনো গন্ডগোল আছে এই বাড়িটাতে।

.বাকি পার্ট
পরের অংশে

পরের পার্ট পড়তে এখানে ক্লিক করুন
তো আজকে এই পর্যন্তই । মানুষ মাত্রই ভুল হয় । তাই ভুল হলে ক্ষমা করে দিয়েন । আশা করি পোস্টটি সবার ভালো লেগেছে । কোনো কিছু না বুঝতে পারলে কমেন্টে জানান । আপনি চাইলে এই লিংক এ ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে join করতে পারেন । আর যেকোনো প্রয়োজনে ফেসবুকে আমার সাথে যোগাযোগ করবেন ।




The post নিয়ে নিন একটি চমৎকার ভৌতিক গল্প [প্রথম অংশ] appeared first on Trickbd.com.

ভালোবাসার চড়াই উৎরাই- ১ম পর্ব

Posted:

হ্যালো ব্রো, স্বাগতম, সবাইকে, আমার আজকের আরেকটা নতুন টিউটোরিয়ালে । আশা করি সবাই খুবই ভালো আছেন। ভালো তো থাকারই কথা, কারন trickbd র সাথে থাকলে সবাই খুব ভালো থাকে । আর ভালো থাকার জন্যই মানুষ ট্রিকবিডিতে আসে। চলুন শুরু করা যাক।

আজকে আমি আপনাদেরকে একটি অসাধারন রোমান্টিক গল্পের কিছু অংশ। পরবর্তী অংশ আমি পরবর্তী আরেকটি পোস্টে দেয়ার চেষ্টা করবো যদি আপনাদের অনুপ্রেরণা পাই ।


গল্পের নাম:
“ভালোবাসার চড়াই উৎরাই”

ঢাকার ছোট্ট একটি ফ্ল্যাটে থাকে দুই চাচা-ভাতিজা। দু’জনেই মোবাইল কম্পানিতে চাকুরি করে। তাদের গ্রামের বাড়ি পূর্বধলা ।

একদিন তারা অফিস শেষ করে বাসায় আসে। তারপর তারা খাওয়া দাওয়া শেষ করে টেলিভিশন দেখতে বসে। হঠাৎ করে বিদ্যুৎ চলে যায়। তখন ভাতিজা চাচাকে বলে, চাচা তোমাকে কত করে বলি তুমি একটা বিয়ে কর। চাচা, একটা কেন দু’ইটা বলতে পারিস না। আহ্ চাচা খেয়াল করো না তো। সবদিক একটু চিন্তা করে দেখ। প্রথম দিক হল— তোমার বয়স বেড়ে যাচ্ছে। সেই সাথে তোমার মাথায়ও টাক হতে শুরু করেছে। (চাচা মাথায় হাত দিয়ে দেখছে) ক’দিন পরে তোমাকে কোন মেয়েই বিয়ে করবে না। চাচা – এই কথা তুই আগে বললি না কেন?

চাচা আরও শুন – ভাতিজা

হে আরও হতবিহুম্বল চাচা ।

তুমি আমি বাড়ি থেকে কত দূরে এই ঢাকা শহরে চাকুরি করি খাওয়া থাকাতেই অর্ধেক চলে যায়। তাছাড়া বুয়ার রান্নাও তো ভাল নয়। তাছাড়া চাল, ডাল, কাচাবাজারের অর্ধেকেই তো চুরি করে।

চাচা তুই ঠিকই বলেছিস। আচ্ছা মিথান বিয়ে করার পর বউ যদি রান্না করতে

না চায় ।

মিথান সেজন্য তুমি গ্রামের একটা ভাল মেয়েকে বিয়ে করবে।

চাচা-ভাতিজা সত্যিই তোর মাথায় অনেক বুদ্ধি। এই মাস শেষে বাড়িতে গিয়ে একটা ঘটক ধরব।

মিথান বলল- চাচা আর যাই বল আমার চাচী কিন্তু খুব সুন্দরী হতে হবে।

চাচা- অবশ্যই ।

চাচা হেসে ভাতিজাকে বলল চল এখন শুয়ে পড়ি।

ভাতিজা – চল।

মিথান লাইট অফ করল। পরে তারা নিজ নিজ বিছানায় শুয়ে পড়ল।

রাত সাড়ে বারটা।

মিথান স্বপ্নে দেখল তার মা খুব অসুস্থ। জ্বরে ছটপট করছে। আর মিথানকে বলল, বাবা একটু পানি দিবে?

মিথান কাঁথা ফেলে দিয়ে উঠে বসল।

হ্যাঁ মা অসুস্থ (কপাল দিয়ে ঘাম ঝরছে)

মাকে একটু ফোন করি। চাচা নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে।

মিথান তার মার নাম্বারে ডায়েল করল। কিন্তু ঢুকছে না।
মিথান অস্থির হয়ে উঠছে। বলছে

মার নাম্বার বন্ধ। এখন আমি কি করি?

ও… মিশির নতুন নাম্বারে ফোন দেই।

মিথান তার ফোন থেকে তার বোন মিশির নাম্বার খোঁজছে।

হঠাৎ করে তার মনে পড়ল যে মিশির তো নতুন ফোন নিয়েছে। মিশির নাম্বারটা
মিথেনের ফোনের Save-এ নেই। পরে মিথান টেবিল থেকে একটা খাতা
নিয়ে মিশির নাম্বার নিয়ে ডায়াল করল।

ফোন বাজছে কিন্তু রিসিভ করছে না। কয়েক বার কল দেওয়ার পর

হ্যালো, কে? (অপরিচিত কণ্ট)

হ্যা আপনি কাকে চান? আমি মিথান বলছি। আসলে আমি আমার বোনের

নাম্বারে ফোন দিয়েছিলাম। ভুল হয়ে আপনার নাম্বারে ঢুকে গেছে।
ফাইজলামি করেন না, এত রাতে বোনের নাম্বারে ফোন দিয়েছিলেন?
আসলে মা অসুস্থ স্বপ্নে দেখেছি তো সেজন্য আর কি।
মিথান।

ও আমি দুঃখিত। তাহলে আপনি তাড়াতাড়ি আপনার বোনের নাম্বারে ফোন
দেন।

ঠিক আছে আপনি কিছু মনে করবেন না।

যাই – মিথান ভাই, আপরিচিত কণ্ঠস্বর।

তারপর মিথান আবার খাতা দেখে মিশির নাম্বারে ডায়েল করল। এই বার মিশি

রিসিভ করল।

হ্যালো ভাইয়া রাতে ফোন দিলি যে?

মিথান – স্বপ্নে দেখলাম মা অসুস্থ। মার কোন অসুখ বিসুখ আছে নাকি রে?

মিশি – না । তুই এসে মাকে দেখে যা।

মিথান – আসব তো কয়েক দিন পর। আচ্ছা মিশি এখন তো অনেক রাত।
রেখে দেই পরে কথা বলব নে।

মিশি– আচ্ছা।

বালিশের কাছে ফোনটা রেখে মিথান শুয়ে পড়ল। চোখ বন্ধ করে সে ঘুমানোর
চেষ্টা করল। কিন্তু চাচা এমন ভাবে নাক ডাকছে যে তার ঘুমানো সম্ভব হচ্ছিল
না। এবার সে চিৎ হয়ে শুইল আর ভাবতে থাকল। অজানা কণ্ঠস্বরের সেই
মেয়েটির কথা। মনের অজান্তেই সে একজনের ঘুম ভাঙাল। মিথান মনে মনে
ভাবছে মেয়েটির নাম্বারে আর একবার ফোন দিলে কেমন হবে। সে সিদ্ধান্ত
নিতে পারছে না যে ফোন দিবে, না দিবে না।

এক পর্যায়ে কোন হেসিটেশন ছাড়াই মিথান অজানা কণ্ঠস্বরের মেয়েটির কাছে
ফোন দিল। একবার বাজতেই মেয়েটি রিসিভ করে কোন কথা বলল না।
হ্যালো- মিথান

হ্যাঁ, আপনার মা কি সত্যিই অসুস্থ? অপরিচিত কণ্ঠস্বর।
না, আপনি এখনো ঘুমাননি?

আসলে রাতে আমার একবার ঘুম ভেঙ্গে গেলে সহজে ঘুম আসে না।
ওমা আপনার ঘুম আর আমার ঘুমের এত মিল- মিথান।

আচ্ছা আপনার বোনের নাম কি?

মিশি – মিথান।

মিশি – এত খুবই সুন্দর নাম।

আমার নাম রেখে আমার বোনের নাম জিজ্ঞেস করলেন যে? আমার কোন বোন
নেই তো তাই— আমার নাম মিথান। আমি একটা মোবাইল কম্পানিতে চাকুরি
করি। আমার চাচাও একই চাকুরি করি। দু’জন এক সাথেই ঢাকায় থাকি। আর
আমাদের গ্রাম পূর্বধলা ।
অপরিচিত কণ্ঠস্বর তার পরে বলল

সত্যি বলছেন তো

মিথান ছি: ছি: ছি:। মানুষ সম্পর্কে আপনার নেতিবাচক ধারণা এত প্রকট।
আমি কাউকে সহজে বিশ্বাস করি না।কিন্তু কেউ যদি নিজেকে বিশ্বাসী প্রমাণ
করে তাহলে তাকে অবিশ্বাস করি না। আমার পরিচয়টা সত্য বিশ্বাস করা না
করা আপনার ব্যাপার। আচ্ছা আপনার নামটা কি বলবেন?

অপরিচিত কণ্ঠস্বর- চন্দনা কুড়ি।
মিথান – আপনি চন্দনা কুড়ি। খুব সুন্দর।

কুড়ি- আসলে আমার নামটাই সুন্দর। আমি সুন্দর নই ।

মিথান- কে বলেছে? আপনার কণ্ঠ, কথা দু’টিই সুন্দর।
কুড়ি- আপনার কাল অফিস নেই ।

মিথান- হ্যা ।

কুড়ি – ঘুমাতে যাবেন না।

মিথান – কেন আমার সাথে কথা বলতে আপনার ভাল লাগছে না?

কুড়ি- রেখে দিন নয়তো সকালে উঠতে পারবেন না।

মিথান- আপনি খুব ভাল মেয়ে। আমার মায়ের কথা জিজ্ঞেস করলেন, বোনের
নাম জিজ্ঞেস করলেন। আর আমার অফিস নিয়েও চিন্তা করলেন।
কুড়ি

ভালো না ছাই। আমাদের এলাকায় আমি সবচেয়ে দুষ্ট।

মিথান- কুড়ি, আপনার ঠিকানা আর আপনি কি করেন তা বললে আমি রেখে দিব।

কুড়ি- আমি ইন্টারমিডিয়েট ফাস্ট ইয়ার এ পড়ি আর ঠিকানা আরিচাঘাট । মিথান- আমি আপনাকে কখন ফোন দেব?

কুড়ি- আসলে আমার বাবা মা ভাই কেউ ফোনে কথা বলা পছন্দ করে না। মিথান- তাহলে আপনার সুযোগ মত আমাকে ফোন দিলে খুশি হব।

কুড়ি- না, মানে ফোনে কথা বলা আমারও পছন্দ না মিথান- আমি আমার জীবনের প্রথম একজনকে ফোন দেয়ার কথা বললাম। (বলে মিথান দীর্ঘশ্বাস টানল)। আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে আমিই আপনাকে মাঝে মাঝে ফোন দিব এতে যদি আপনি বিরক্ত হোন তাহলে দিব না। আচ্ছা রাখছি তাহলে বাই।

কুড়ি- বাই ।

তারপর মিথান রুমে গিয়ে কাঁথা নিয়ে শুয়ে পড়ছ। চাচা ঘুমাচ্ছে। পরিদিন সকালে

চাচা ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করে ফ্রেশ হয়ে চা বিস্কুট খাচ্ছে। আর মিথানকে ডাকছে । মিথান মিথান বলি এখন উঠ, ক’টা বাজে দেখেছিস, এই মিথান। মিথান বলল, চাচা প্রতিদিনই তো সময়মত উঠি।

তুমি শুধু শুধুই ডাকাডাকি কর কেন? চাচা উত্তরে ডাকাডাকি কি এমনি করি। সকালে ঘুম থেকে উঠা যে স্বাস্থ্যের জন্য কত ভাল তা তো তুই বুঝিস না। উঠে পড়। মিথান বিছানায় উঠে বসল। তারপর তার চাচাকে বলল ।

আচ্ছা চাচা তুমি না গতকাল বলেছিলে ঘটক ধরবে।

উত্তরে চাচা হ্যা। এই মাস শেষে বাড়িতে গিয়ে তোর মাকে বলব একটা ভাল

ঘটকের সাথে কথা বলতে মিথান – চাচা তুমি যে কি বল না মার সাথে বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে তোমার বাড়িতে যেতে হবে।

চাচা – আরে ছোকরা, তুই আর আমি তো যাবই যাব।

মিথান – ফোনেই তো বলতে পার।

চাচা- বলি, বাড়িতে গিয়েই বলি। আচ্ছা তোর এত তাড়াহুড়া কেন বলত?

মিথান- তুমি চাচা কিছুই বোঝ না। তোমার বিয়েটা শেষ হলে তারপর

আমারটা। চাচা – ও শ্যূায়ারের বাচ্চা দাঁড়া তোকে বিয়েটা করছি। বলে চাচা মিথানের বিছানায় দৌড়ে গেল।

১৩

মিথান হেসে লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নেমে বাথরুমে চলে গেল তার মোবাইল ফোনটা নিয়ে। চাচা হাসতে লাগল। মিথান বাথরুমে গিয়ে কুড়ির নাম্বার ডায়েল। করল। ঢুকছে না। কুড়ির নাম্বার বন্ধ। মিথান মনে মনে ভাবছে নাম্বারটা বন্ধ। কেন? কিছুক্ষণ পরে মিথান আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁত ব্রাস করতে লাগল। তারপর গোসল সেরে খাওয়া দাওয়া শেষ করে মিথান আর তার চাচা অফিসে গেল।

তারপর বিকাল পাঁচটা

মিথান কুড়ির নাম্বার ডায়েল করে ও পাচ্ছে না। সে বিচলিত হয়েছে। সে রাতে ডায়েল করেও পায় নি। পরদিন সকালে মিথান ডায়েল করে দেখল যে কুড়ির নাম্বারটা খোলা। সে তখনি চাচাকে বলল চাচা আমি একটু বাহির থেকে ঘুরে আসি। চাচা উত্তরে বলল, যা তাড়াতাড়ি আসিস অফিসে যেতে হবে। মিথান আচ্ছা বলে দৌড়ে ছাদে গিয়ে কুড়িকে ফোন দিল কুড়ি রিসিভ করল ।

হ্যালো আসসালামু আলাইকুম মিথান – অলাইকুম সালাম। কি খবর আপনার ফোন বন্ধ কেন? আর ও কোন

নাম্বার আছে না কি?

কুড়ি – আসলে মোবাইলে চার্জ ছিল না। –

মিথান- কি করছেন?

কুড়ি- পড়তে বসেছি। অফিসে যাবেন না?

মিথান – যাব মাত্র তো সাতটা বাজে ।

মিথান- বিরক্ত করলাম। কুড়ি- না কি বলবেন বলুন?

মিথান- আপনি কিছু বলবেন না?

কুড়ি- আপনারই তো বলার কথা। মিথান – আচ্ছা, সরাসরি বলছি। আপনার পছন্দের কোন ব্যক্তি আছে?

কুড়ি- না আপনার আছে। মিথান

হে তিনি আমার মা। আচ্ছা আজকাল কার কলেজ পড়া মেয়েদের পছন্দের মানুষ থাকে আর আপনার নেই কেন?

কুড়ি- আমাকে কে পছন্দ করেবে। সারাদিন এ গাছ থেকে ও গাছে ঘুরে বেড়াই বাবা মার ফসল চুরি করি। আচ্ছা আপনার তো পছন্দের মানুষ বেশ কয়েকটা

থাকার কথা, নেই বললেন?

মিথান – হা, হা। কলেজে যাবেন না? 1

কুড়ি – হে ।

মিথান – আপনি কোন কলেজে পড়েন?

কুড়ি- আরিচাঘাট মহিলা ডিগ্রী কলেজ। শুনেন মা শুনলে বকা দিবে। আপনি

রেখে দিন।

মিথান- আচ্ছা রাতে ফোন দিব কিন্তু।

কুড়ি- কেন, রাতে ফোন দিবেন কেন? মিথান – সেটা রাতেই বলব। রাখছি বাই

কুড়ি- বাই ।

মিথান তারপর রুমে গিয়ে গোসল, খাওয়া দাওয়া সেরে চাচাকে নিয়ে অফিসে চলে যায়। রাত সারে এগারটা

চাচা ঘুমিয়ে তখন স্বর্গবাসী । মিথান ফোনটা নিয়ে আস্তে আস্তে রুম থেকে বেরিয়ে ছাদে গিয়ে কুড়িকে ফোন দেয়। কয়েকবার দেওয়ার পর কুড়ি রিসিভ করে। আবার মিথানের পছন্দের মানুষ না থাকার কারণ জানতে চায়। মিথান মুচকি হেসে আসলে আমি মনের মত কোন মেয়ে এখনো পাইনি।

কুড়ি- কেমন মেয়ে চান আপনি?

মিথান – একটু চঞ্চল প্রকৃতির মেয়ে যে চালচলনে থাকবে চঞ্চল কিন্তু মার্জিত। সব বিষয়ে সে চঞ্চল থাকলেও Sexually চঞ্চল থাকবে না।

কুড়ি – আপনি খুঁজতে থাকেন, পাবেন। – মিথান – আপনার পরিবারে কে কে আছে?

কুড়ি – আমার বাবা মা আর এক ভাই । আপনার? –

মিথান – মা, দুই বোন, এক বোন বিবাহিত। আর একজন এইচ.এস.সি দিবে – ও শুনেন আগামী পরশু আমি আর আমার চাচা আমাদের গ্রামের বাড়িতে যাব। সেখান থেকে আপনাকে ফোন দিব। আপনি অবশ্যই রিসিভ করবেন।

কুড়ি – ঠিক আছে । –

মিথান – আর হে আপনি আপনার ফোন চার্জ দিয়ে রাখবেন।

কুড়ি – আচ্ছা।

মিথান – রাখি তাহলে?

কুড়ি – আচ্ছা।

মিথান – বাই, Good night

কুড়ি – বাই, Good night মিথান কুড়ির সাথে বিকালে ও রাতে কথা বলে। এদিকে মিথান ও তার চাচা তাদের গ্রামের বাড়িতে যায়। গিয়ে তারা একসাথে খেয়ে কিছুক্ষন রেস্ট নেয়। মিথান গ্রামের হাটে যায় বাজার করতে। এই সুযোগে চাচা মিথানের মাকে বলে তার বিয়ের কথা। মিথানের মা তো ভীষণ খুশি তার দেবর এত দিনে বিয়ে রবে ঠিক করছে। তাই তিনি সেদিনেই পাশের বাড়ির ঘটক চাচাকে খবর

দিয়েছে। মিথানের মা ও চাচা ঘটকের সাথে বিস্তারিত আলাপ করেছে। মিখানের চাচা ঘটককে বলেছে চাচা আমি কিন্তু এক টাকাও যৌতুক নেব না। আমি শুধু একটা ভাল বউ চাই। ঘটক চাচা বলে, আচ্ছা আচ্ছা আমি আজই পাশের গেরামের জমির আলীর কাছে যাব। তার কলেজ পড়া একটা ভাল মেয়ে আছে। তোমরা কোন চিন্তা কইরো না। বলে ঘটক চাচা চলে গেল।

কিছুক্ষণ পর মিথান হাট থেকে বাজার নিয়ে আসে। বাজার পাকঘরে রেখে মিখান তার মায়ের কাছে বসে। মিথানের মা তো খুশিতে আত্মহারা । মিথানের মা মিথানের চাচাকে উদ্দেশ্য করে বলল, মিন্টুর বিয়ের কাজটা শেষ হলেই আমার বাবার বিয়ে। লাল টুকটুকে একটা বউ আমি নিজে পছন্দ করে আনমু। যাতে আমার ঘরে আলো না থাকলেও আলো জ্বলে। মিথানের মা মিথানের দুই গালে দুই হাত রেখে মিথানের চোখের দিকে তাকিয়ে বলে, বাবারে আমার একটাই স্বাদ আর কোন স্বাদ নাই। পিছন থেকে মিথানের বোন মিশি বলে, মা আমারও একটা সুন্দরী ভাবি পাওয়ার খুব স্বাদ। মিথান তার মায়ের দু’হাত ধরে বলে। মা আগে চাচার বিয়েটা শেষ হোক তারপর না হয় তুমি আমার জন্য মেয়ে দেখো। মিথান মিশির চুলে টান দিয়ে বলল, এই তোর পড়াশুনা নাই বড়দের কথা শুনছিস? ছেড়ে দিয়ে ভাইয়া ছাড়, লাগছে তো। এখন পড়তে বস গিয়ে, মিশি আচ্ছা বলে তার পড়ার ঘরে গেল।

পরদিন সকালে ঘটক চাচা এসে মিথানের মা আর চাচাকে ডাকল। মিথানের মা বিয়ের খবর জানতে চাইল। ঘটক চাচা বলল, ছেলে যৌতুক চায় না শুইনা মেয়ের বাপে বিয়ে দিব না। কইয়া দিল। চাচা অবাক হয়ে বলল, কেন? ঘটক বলল, তুমি যে যৌতুক চাও না তা শুইনা। মেয়ের বাপে মনে করছে তোমার কোন কিছুর ত্রুটি আছে। আমি ভাল কইলেও বিশ্বাস করে নাই ।

এই কথা শুনে মিথানের মা ও চাচা দু’জনেই বাকশূন্য হয়ে পড়ে। ঘটক চাচা তারপরও বলে, মিন্টু মিয়া আমি তাইলে এক কাজ করি তুমি যৌতুক চাও না কি তা আগেই কওয়ার দরকার নেই। মেয়ে দেইখা তোমাদের পছন্দ অইলে আর তাদের তোমাদের পছন্দ অইলে যদি তারা কিছু দিতে চায় তা নিবা, সমস্যা কিডা? তারপর চাচা খানিকটা ম্লান হয়ে বলল, ঠিক আছে দেখেন।

আমি তো কাল চলে যাব। আপনি ভাবির সাথে কথা বইলেন। ভাবি পরে ফোনে আমাকে জানাবেন। ঘটক চাচা বললেন, আচ্ছা বাবা, আমি তাইলে এহন আহি।

বলে ঘোটক চাচা চলে গেল। এদিকে মিথান কুড়িকে ফোন দেয়। সে একটা কথা কুড়িকে বলার জন্য বেশ কয়েকবার ফোন দিয়েও বলতে পারে নি। শেষে লজ্জায় মরি মরি করেও সে কুড়িকে প্রেমের আফার দিয়েছিল। কুড়ি বলেছিল যে সে মিথানকে না দেখে কিছু বলতে পারবে না। উত্তরে মিথান বলেছিল, সে আর তার চাচা একসাথে থাকে। সেজন্য সময় সুযোগমত দেখা করতে হবে। কুড়ি যাতে তার প্রেম অফারে অমত না করে সেজন্য অনুরোধ করেছিল। তার অনুরোধে কুড়ি সম্মত কি না তা কিছুই বলে নি।

পরদিন মিথান ও চাচা ঢাকায় চলে আসে। সেখানে ও যথারীতি মিথান কুড়ির সাথে কথা বলতে থাকে।

এভাবে এক সপ্তাহ চলে গেল । ঘোটক চাচার জন্য কোন ভাল মেয়ের সন্ধান করতে পারে নি। এদিকে মিথান কুড়ির কথার পরিমাণ বেড়েই চলছে। মিথান অত্যান্ত চালকি করে তার চাচার চোখ ফাঁকি দিয়ে কথা বলে। কুড়িও তার মা বাবার অজান্তে মিথানের সঙ্গে কথা বলে । মিথান কুড়ির সাথে দেখা করার আগ্রহ থাকলেও সে তার চাচার জন্য পারছে না। মিথান কুড়ির ঠিকানা, তার মায়ের নাম্বার খাতায় লিখে রেখেছে।

কুড়ির সাথে কথা বলতে বলতে তারা দু’জনই এক সময় একান্তই দু’জনের অবগত হয়ে যায়। একে অপরের আঁখি হয়ে যায়। আপনি থেকে হয় তুমি। কুড়ি তার বার মিথানের কাছে কুৎসিত জাহির করে নিজেকে ছোট মনে করে । মিথান সেজন্য রাগ করে বলে কুৎসিত থাকলেও তুমি আমার শুধু আমার । এ কথা শুনে কুড়ি হেঁসে বলে সিনেমার ডায়লগ তো ভালই পার।

এ কথা শুনে মিথান কুড়ির কাছে আর ফোন করবে না বলে ফোন কেটে দেয়। পরদিন কুড়ি মিথানকে ফোন দেয়। মিথানের অভিমান শেষ। মিথান সেদিন তার কথায় কুড়িকে তার বাসর ঘরে স্থান দেয় আরও কত কি? কুড়ি মিথানের কথায় প্রথমে আপত্তি করলেও আবেগ বসত পরবর্তীতে আপত্তি করেনি। বরং কুড়িও মিথানকে জায়গা দেয় তার মনের ছোট্ট খাচায় প্রথম তার প্রেমিক পুরুষ হিসেবে।

তাদের কথার সম্পর্ক গভীর থেকে গভীর হতে থাকে। কথায় কথায় তারা একে অপরকে বুঝার চেষ্টা থেকে বুঝতে শিখে। একদিন মিথান কুেিড়কে জীবন সঙ্গী করার প্রতিশ্রুতি দেয়। মিথান কুড়িকে ও প্রতিশ্রুতি করতে বলে। কিন্তু কুড়ি বলে এত সহজে প্রতিশ্রুতি দেওয়াটা ঠিক না। আমি তোমার জন্য সর্বস্ব চেষ্টা করব। মিথান এতে রাগ করে । কুড়ির মিথানের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে। অবশেষে কুড়িও মিথানকে জীবন সঙ্গি করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। এভাবে প্রায় এক মাস চলে গেল।

ঘটক চাচা মিথানের চাচার জন্য ভাল মেয়ে খুঁজতে খুঁজতে তার জুতো ক্ষয় করে ফেলেছেন। শেষে একটা পেয়েছেন। ইতিমধ্যে মেয়ে পক্ষ ছেলের বাড়ি-ঘর দেখেছে। তাদের পছন্দও হয়েছে। বাকি ছেলে দেখা। ছেলে দেখবে কিভাবে তাও ঠিক হয়েছে। ছেলে যখন কয়েকজনকে নিয়ে মেয়ে দেখতে যাবে তখন মেয়ের পক্ষ ছেলেকে দেখবে।

তো তাহলে আমার আজকের পোস্ট আমি এখানেই শেষ করছি। আশা করছি গল্পটি আপনার ভালো লাগছে l যদি গল্পটা ভালো লাগে তাহলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন আমি এর পরবর্তী পার্ট দেয়ার চেষ্টা করব। সবাইকে ধন্যবাদ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য।

মানুষ মাত্রেই ভুল হয় , তাই পোষ্টে কোন ভুল থাকলে দয়া করে মাপ করে ‍দিয়েন, আর প্লিজ কমেন্টে লিখে ভুলগুলা শোধরানোর সুযোগ করে ‍দিয়েন।
কোন কিছু না বুঝলে বা কোন কিছু জানার থাকলে, আমাকে কমেন্টে জানান।
পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই একটি লাইক দিবেন এবং কমেন্টে তা জানিয়ে দেবে যেন আমি আরো নতুন নতুন পোস্ট করার উৎসাহ পাই।

আর এরকম নিত্যনতুন আরো তথ্য জানতে এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকার জন্য আপনি আমাদের ফেইসবুক গ্রুপে জয়েন হতে পারেন l group link—>

আর যেকোন প্রবলেমে ফেসবুকে আমি [—>profile link]
তাহলে সবাইকে ট্রিকবিডির সাথে থাকার জন্য আমন্ত্রন জানিয়ে আজকে আমি আমার আজকের পোস্ট এখানেই শেষ করছি। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।


The post ভালোবাসার চড়াই উৎরাই- ১ম পর্ব appeared first on Trickbd.com.

ভিপিএন আসলে সত্যি আমাদের আইপি এড্রেস হাইড করে!!

Posted:

আসসালামুয়ালাইকুম প্রিয় Trickbd এর সব সদস্যগণ

কেমন আছেন সবাই।

আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন সবাই।

আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

আজকের পোস্ট এর বিষ়বস্তু হচ্ছে সত্যি কি ভিপিএন

আমাদের আসল আইপি এড্রেস পরিবর্তন করে?

বর্তমানে সারা পৃথিবীতে ইন্টারনেটের রাজত্ব।

সবাই কম বেশি ইন্টারনেট ইউজ করে থাকে।

তাই বর্তমানে ইন্টারনেট এর জন্য মানুষ এর

প্রাইভেসি রক্ষা করার জন্য

প্রায় অনেক মানুষ ভিপিএন ব্যাবহার করে থাকে।

কিন্তু আসলে কি ভিপিএন ব্যাবহার করে আসল

আইপি অ্যাড্রেস রক্ষা করা সম্ভব?

হ্যা সম্ভব তবে আমরা যেসব ফ্রি ভিপিএন

ব্যাবহার করি সেইগুলা ৮০% আমাদের

নিজস্ব গোপনীয় রক্ষা করে না।

কিন্তু প্রিমিয়াম ভিপিএন যেইগুলো আছে ৯০% তারা আমাদের

গোপনীয়তা রক্ষা করে।

তো কিভাবে বুঝবেন আপনার ভিপিএন আসলে আপনাকে

কতটা নিরাপত্তা দিচ্ছে,,

জানতে হলে প্রথমে আপনি আপনার ভিপিএন কানেক্ট করুন

আমার একটি প্রিমিয়াম ভিপিএন

আমি কানেক্ট করলাম , এই দেখুন আমার

সিঙ্গাপুর সার্ভার সিলেক্ট করে আমি কানেক্ট করলাম,

এরপর আপনি এই ওয়েবসাইট যাবেন,

ক্লিক করুন এখানে

এর পর একটু স্ক্রোল করে নিচে আসুন

দেখবেন আপনার লোকেশন দেখাচ্ছে,,,

তাই প্রিমিয়াম ভিপিএন ব্যাবহার করুন

নিজে নিরাপদ থাকুন,,

ঝামেলা মুক্ত থাকুন।

আর যারা ফ্রি ভিপিএন ব্যাবহার করেন

তাদের জন্য সুখবর sky ভিপিএন, tometo, এইগুলো

তে আপনারা আপনাদের লোকেশন হাইড

রাখতে পারবেন।

তো বন্ধুরা এই ছিল বিস্তারিত।

ধন্যবাদ সবাইকে পোস্টটি পড়ার জন্য।

যেকোনো প্রয়োজনে ফেসবুকে আমাকে পাবেন এই লিংকে

আমার ফেসবুক আইডি

The post ভিপিএন আসলে সত্যি আমাদের আইপি এড্রেস হাইড করে!! appeared first on Trickbd.com.

গ্রামীণফোন এ সর্বনিম্ন রিচার্জ ২০ টাকা ।

Posted:

গ্রামীণফোন এ সর্বনিম্ন রিচার্জ ২ জুলাই থেকে ২০ টাকা ।

বর্তমানে সর্বনিম্ন রিচার্জ ১০ টাকা ,২০ টাকা সর্বনিম্ন রিচার্জ ২ জুলাই থেকে কার্যকর করা হবে।

তবে ২০ টাকা এর নিম্নে সকল কার্ড মিনিট প্যাকগুলো এখনকার মতো চালু থাকবে।

The post গ্রামীণফোন এ সর্বনিম্ন রিচার্জ ২০ টাকা । appeared first on Trickbd.com.

আপনার লেখাপড়ায় মন না বসার কারণ ও তা থেকে বাঁচতে আপনার করণীয় দেখে নিন

Posted:

আপনার পড়ায় মন বসে না । এমন অবস্থায় আপনার করণীয় কাজসমূহ নিয়ে লেখা আমার আজকের আটিকেলটি পড়ার জন্য অনুরোধ রইল । এই বিষয়ে আপনার প্রয়োজনীয় প্রশ্নের উত্তরসমূহ আমার আটিকেল থেকে পেতে পারেন । আটিকেলটি পড়ে আপনার কেমন লাগল তার মতামত ব্যক্ত করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি ।

আমাদের অনেকেরই পড়ায় মন বসে না । এর সমাধান আমরা অনেকেই খুঁজে বেড়াচ্ছি । যেহেতু এটি একটি সমস্যা । তাই এর সমাধান থাকা আবশ্যক । এটি আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের পরিচিত সমস্যা । তো চলুন পড়ায় মন না বসার কারণ ও সমাধান জেনে নিই ।


পড়ায় মন না বসার কারণ ও করণীয় :-

আমাদের বেশিরভাগ মানুষ টিকটক,ফেসবুক, টুইটার সহ নানা ধরনের সামাজিক ওয়েব সাইট ব্যবহার করে থাকি । এগুলো আমাদেরকে আসক্ত করছে । বিশেষ করে টিকটকের শট ভিডিও । এই আসক্তির কারণেই বেশিরভাগ মানুষের পড়ায় মন বসে না । তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে ।

~~এরপর যে কারণ সবথেকে বেশি মানুষের মধ্যে দেখা যায় সেটি হলো দীঘক্ষণ একনাগাড়ে পড়াশোনা করা । দীঘক্ষণ পড়াশোনা করলে পরবতীতে পড়তে আর ইচ্ছায় করবে না । তাই আমাদের উচিত পড়ার ফাঁকে ফাঁকে একটু করে ব্রেক নিয়ে নেওয়া । যেমন বিকালে খেলাধুলা করা । রাত্রে পড়ার মাঝে ব্রেক হিসেবে নামায আদায় গ্রহণযোগ্য হতে পারে ।

^^তারপর যে কারণটি অনেকের মাঝে দেখা যায় সেটি হলো পড়াশোনার পরিবেশ খারাপ থাকা । আমাদের দেশের বেশিরভাগ ছাত্রের ক্ষেত্রে পড়াশোনার পরিবেশটা খুব বেশি ভালো থাকে না । পরিবারে অধিক জনসংখ্যা থাকলে এই সমস্যাটি দেখা যায় । পরিবেশকে সুন্দর ও সাবলীলভাবে তৈরি করে এ সমস্যা দূরীকরণ করা যেতে পারে ।

«» অন্যের সাথে গভীর বন্ধুত্বও পড়াশোনায় মন না বসার আরও একটি কারণ । বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে এটি দেখা যায় । বন্ধুত্ব যতটা ভালো ততটা খারাপও । অন্যের সাথে সঙ্গ দিতে দিতে একটা নেশার আশঙ্কা দেখা যায় । তার সাথে দেখা না হলে মনও খারাপ থাকে । আর মন খারাপ থাকলে পড়ায় মন বসে না । তার সাথে নানা ধরনের কাজে জড়িত থাকতে ইচ্ছা করে । তাই আমাদেরকে অন্যের সাথে গভীর সঙ্গ ও অতিরিক্ত বন্ধুত্ব থেকে বিরত থাকতে হবে ।

$$ বাংলাদেশের বেশিরভাগ ছেলেমেয়ে বিশেষ করে শহুরে অঞ্চলের ছেলেমেয়েদের বাহিরে খেলা করার সুযোগ থাকে না । ঘরে বসে একা একা অবসর সময় কাটাতে হয় । অনেকে কম্পিউটার গেমসহ নানা ধরনের আসক্তিজনিত অবস্থায় আক্রান্তও হয়ে যায় । যা তাদেরকে একঘেয়েমি করে তোলে । পযাপ্ত খেলাধুলা না করলে লেখাপড়া করতে কোন মানুষ আগ্রহী হয় না । তাই আমাদের উচিত অবসর । শারীরিকভাবে কসরত হয় এরুপ খেলায় স্বশরীরে অংশগ্রহণ করা ।

¤¤ আমাদের দেশে অনেক বাবা-মা বিভিন্ন সরকারী বা বেসরকারী পেশায় নিয়োজিত থাকে । অনেক সময় তাদেরকে একস্থান থেকে অন্যস্থানে স্থানান্তরিত হতে হয় । ফলে ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে শিশু নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারে না । শিশুর সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া বাঁধাগ্রস্থ হয় । ফলে শিশুদের পড়ায় মন বসে না । স্কুল পরিবতনেও এ সমস্যা দেখা দিতে পারে । তাই আমাদের উচিত শিশুদের স্কুল বা স্থান পরিবতন না করা ।

তো আজ আমার পক্ষ থেকে এতটুকুই ছিল । ধন্যবাদ ।

The post আপনার লেখাপড়ায় মন না বসার কারণ ও তা থেকে বাঁচতে আপনার করণীয় দেখে নিন appeared first on Trickbd.com.

IDM এর Crack নির্ভরশীলতা কাটিয়ে জেনে নিন Free Alternative গুলো

Posted:

Windows ব্যাবহার করেন , বিভিন্ন ফাইল ডাউনলোড করেন অথচ IDM বা Internet Download Manager এর নাম শুনেন নি এমন লোক হারিকেন লাগিয়ে খুজলেও পাওয়া যাবে না । এটি অত্যান্ত পপুলার এবং ফিচার ওয়ালা  একটি ডাউনলোড ম্যানেজার। সব ই ঠিক থাকলেও সমস্যা এটাই যে সফটওয়্যার টি ফ্রি না। মোটামোটি ১৫০০ টাকার মত খরচ করলে এটির লাইফটাইম লাইসেন্স পাওয়া যায় ।

কিন্তু আমরা এটি না করে বিভিন্ন সাইট থেকে ক্রাক ডাউনলোড করি যেটা অনেকের কাজ করে আবার অনেকের ক্ষেত্রে কাজ করেনা।

error

**এছাড়া কিছুক্ষন পর পর সিরিয়াল কি চাওয়ার প্যারা তো আছেই।

আবার অনেক ইউজার রা Ransomware বা আরো বিভিন্ন ভাইরাস এর এটাক এর শিকার হন। তো আজকে আমি কিছু Alternative নিয়ে আলোচনা করবো যেগুলো দিয়ে আপনি IDM এর সব ফিচার না পেলেও , অনেক ভালো স্পিড,Resume Capability এবং বাকি গুরুত্বপূর্ন ফিচার গুলো পেয়ে যাবেন।

তো আর দেরী না করে মূল পোস্ট এ চলে যাই।

Free Download Manager বা FDM

free download managerfree download manager

***তো ফ্রি ডাউনলোড ম্যানেজার এর জন্য আপনি গুগল এর সার্চ করবেন Free Download Manager অথবা FDM

 প্রথম যে লিংক টি আসবে তাতে ক্লিক করে ডাউনলোড অপশন এ যাবেন। শুধু Windows নয়। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ম্যাক এবং লিনাক্স এও পেয়ে যাবেন।এমন কি Android এর জন্য ও পেয়ে যাবেন Play Store এ খুজলেই। ।

*** ডাউনলোড এ ক্লিক করে ডাউনলোড হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। 

*** এরপর সাধারন নিয়মের মতই ইনস্টল করুন। 

free download manager

*** ইনস্টেলেশন শেষ। এবার এটিকে ব্রাউজার এর সাথে সেটাপ করা বাকি, যেটাকে Free Download Manager এর ভাষায় Browser Integration বলা হয়।

free download manager

*** এর জন্য আপনাকে FDM ওপেন করে ডান দিকের মেনু অপশন এ যেতে হবে এবং Preference এ ক্লিক করতে হবে

free download manager

*** পাশে দেখতে পাবেন Browser Integration নামে একটা অপশন রয়েছে। সেটিতে ক্লিক করলে দেখবেন বিভিন্ন পপুলার ব্রাউজার Edge, Chrome , Firefox এর জন্য এক্সটেনশন পেজ এর লিংক দেয়া রয়েছে।

*** আপনার প্রয়োজনীয় ব্রাউজার অনুযায়ি আপনি ক্লিক করে এক্সটেনশন ইনস্টল করে ফেলুন।

এবার পরিক্ষার পালা যে আসলেই এক্সটেনশন কাজ করছে কি না।

*** প্রথমেই ডাউনলোড এর জন্য যে ব্রাউজার ব্যাবহার করবেন তা ওপেন করুন এবং শিওর হয়ে নিন যে এক্সটেনশন টি অ্যাকটিভ করা আছে কি না। না থাকলে করে নিন।

idm to fdm

*** এবার দেখুন কোনো কিছু ডাউনলোড করলে সেটা FDM ক্যাচ করে নিচ্ছে। Download এ চাপলেই আপনার ডাউনলোড স্টার্ট হয়ে যাবে।

 

*** Android এর ক্ষেত্রে শুধু আপনাকে ডাউনলোড লিংক টি কপি করে অ্যাপ এর ভিতরে থাকা প্লাস বাটনে চেপে লিঙ্ক পেস্ট করে ডাউনলোড করে ফেলতে পারবেন।

**আর হ্যা । FDM দিয়ে আপনি টরেন্ট ফাইল ও ডাউনলোড করতে পারবেন।  তাই আলাদা করে BitTorrent ইনস্টল করতে হবে না। অ্যাডস এর ঝামেলা থেকেও মুক্ত থাকবেন। 

তো এভাবেই আপনি ডাউনলোড ম্যানেজার ইনস্টল দিয়ে আপনার যাবতীয় কাজ করতে পারবেন ।

তো আপনি এবার ভেবে দেখুন। ফ্রি অল্টারনেটিভ থাকতে আপনি কেন অনৈতিক ভাবে Crack বা Pirated সফটওয়্যার চালাবেন।

Parallel Downloading

যদি আপনার একান্তই ডাউনলোড ম্যানেজার ইউজ করতে অসুবিধা হয় বা ব্রাউজার এর ডিফল্ট ডাউনলোড মেথড টাই আপনার ভালো লেগে থাকে,

তাহলে আপনি Edge এবং Chrome এর Parallel Download সিস্টেম টা এনাবল করে দিতে পারেন।

এটি অনেকাংশে আপনার ডাউনলোড স্পিড বাড়িয়ে দেবে ।

edge and chrome flags experiemnet feature

*** এজন্য আপনি ক্রোম থেকে Chrome Flags এবং Edge থেকে Edge Flagsএ গিয়ে সার্চ অপশন এ প্যারালাল সার্চ দিলে পেয়ে যাবেন । 

***এনাবল করে দিলে ব্রাউজার টি রিস্টার্ট হবে এবং অই ফিচার টি কাজ শুরু করে দিবে ।

মূলত এই Parallel Download এর সিস্টেম টিকে ব্যবহার করেই IDM / FDM এর মত Downloader কাজ করে। শুধু এগুলো তে ডাউনলোড ম্যানেজ করার সিস্টেম  টা থাকে বলেই এগুলো  (IDM / FDM) ডাউনলোড ম্যানেজার।

যেহেতু Browser Experimental ফিচার। তাই FDM ব্যাবহার করার পরামর্শ থাকবে।

multithreaded download manager

ফায়ারফক্স এর বিল্ট ইন এমন ফিচার রয়েছে কি না আমার জানা নেই। কিন্তু অনেক ইউজার রা Multithreaded Download Manager ইউজ করে থাকেন। আপনি সেটিও ট্রাই করতে পারেন।

বুঝতে অসুবিধা হলে ভিডিও টি দেখে আসুন 😍

তো আজকের মত এটুকুই। ইনশাআল্লাহ আরো পোস্ট নিয়ে আসবো সামনে। যেকোনো প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন আমার ফেসবুক পেজ এ।

ফেসবুক এ আমি

আল্লাহ হাফেজ  😍

 

The post IDM এর Crack নির্ভরশীলতা কাটিয়ে জেনে নিন Free Alternative গুলো appeared first on Trickbd.com.

১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে 5টি সেরা ফোনের রিভিউ

Posted:

আসসালামু আলাইকুম,

আশা করি প্রিয়
ট্রিকবিডিবাসির সবাই ভালো
আছেন।আমিও আল্লাহর
রহমতে আর আপনাদের
দোয়ায় ভালো আছি।

প্রিয়,
ট্রিকবিডির জন্য আজকে একটা পোষ্ট
লেখতে বসলাম।জানি না
আপনাদের কেমন লাগবে…..??

যদি পোষ্টটি পছন্দ হয়
তাহলে অবশ্যই পোষ্টে
লাইক ও কমেন্ট করবেন।

এই আর্টিকেলে ১০ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকার বাজেটের ৫টি সেরা ফোন সম্পর্কে বলবো।সেই ফোনগুলোর র্যাম, রোম ও ক্যামেরা এবং ব্যাটারির পাওয়ার নিয়ে বিস্তারিত লেখার চেষ্টা করবো।কোন ফোনটির ফিচার আপনার ভালো লাগবে সেটা অবশ্যই মন্তব্য করে জানাতে ভুলবেন না।আর আপনার পছন্দ হওয়া ফোনটি মন্তব্যে জানাবেন।
Infinix Hot 11 play ফোনটি ২০২১ এর ডিসেম্বরের শেষের দিকে রিলিজ হয়। ৪জিবি র্যায়ে ও ১২৮ জিবি রোমের ফোনটির মূল্যঃ ১২৪৯০ টাকা।
ফোনটির RAM এবং ROM:
কোম্পানি 4GB/64GB এবং 4GB/128GB এর 2টি ভেরিয়েন্টে ফোনটি লঞ্চ করেছে। গেমিং এর ক্ষেত্রে গ্রাফিক্স, র‍্যাম মোটামুটি ভালো। এইচডি-মানের গ্রাফিক্স গেমগুলি সহজেই চালানো যায় এবং বেশ মসৃণভাবে খেলা যায়।
ক্যামেরা: ফোনের পিছনে রয়েছে একটি 13MP+AI ক্যামেরা যার সাহায্যে আপনি সুন্দর মানের ছবি এবং সর্বোচ্চ 1080p@30fps ভিডিও রেকর্ড করতে পারবেন। তাছাড়া, এটি একটি অতিরিক্ত বৈশিষ্ট্য হিসাবে রয়ে গেছে যেমন ফোনটিতে একটি 8MP সেলফি ক্যামেরা রয়েছে যা দিয়ে আপনি সুন্দর মানের ছবি এবং সেলফি তুলতে পারবেন। আপনি সামনের ক্যামেরা দিয়ে সর্বাধিক 1080p@30fps ভিডিও রেকর্ড করতে পারেন৷ ফোনের ক্যামেরা দিয়ে উচ্চ-মানের সেলফির কাজ অনায়াসে করা যায়।

ব্যাটারি: মোবাইলটিতে একটি অপসারণযোগ্য Li-Po 6000 mAh ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে। যার সাহায্যে আপনি গড়ে 150 ঘন্টা স্ট্যান্ডবাই টাইম এবং 16 ঘন্টা নেট ব্রাউজিং পেতে পারেন। সম্পূর্ণ চার্জে, আপনি 3G-তে প্রায় 42 ঘন্টা পর্যন্ত কথা বলতে পারবেন। 10W চার্জিং সাপোর্ট সহ ফোনটি সম্পূর্ণ চার্জ হতে প্রায় 3:10 ঘন্টা সময় নেবে।


InfinInfinix Zero 8i এর ৮ জিবি র্যায়ের ফোনটির মূল্য আশা করা হচ্ছে ২০ হাজার টাকা।
ফোনটির কর্মক্ষমতা:
ফোনে Android 10 (Q) অপারেটিং সিস্টেম এবং অক্টা-কোর (2×2.05 GHz Cortex-A76 & 6×2.0 GHz Cortex-A55) প্রসেসর।
RAM এবং ROM: কোম্পানি ফোনটি 8GB/128GB এর একক ভেরিয়েন্টে লঞ্চ করেছে। গেমিং এর ক্ষেত্রে গ্রাফিক্স, র‍্যাম মোটামুটি ভালো। সম্পূর্ণ HD-মানের গ্রাফিক্স গেমগুলি সহজেই চালানো যায় এবং বেশ মসৃণভাবে খেলা যায়।
ক্যামেরা: ফোনের পিছনে একটি 48MP+8MP+2MP+2MP ক্যামেরা রয়েছে যার সাহায্যে আপনি সুন্দর মানের ছবি এবং সর্বোচ্চ 4k@30fps ভিডিও রেকর্ড করতে পারবেন। তদুপরি, এটি একটি অতিরিক্ত বৈশিষ্ট্য হিসাবে রয়ে গেছে যেমন ফোনটিতে একটি 16MP+8MP সেলফি ক্যামেরা রয়েছে যা দিয়ে আপনি সুন্দর মানের ছবি এবং সেলফি তুলতে পারবেন। আপনি সামনের ক্যামেরা দিয়ে সর্বাধিক 4K@30fps ভিডিও রেকর্ড করতে পারেন৷ ফোনের ক্যামেরা দিয়ে উচ্চ-মানের সেলফির কাজ অনায়াসে করা যায়।
ব্যাটারি: মোবাইলটিতে একটি অপসারণযোগ্য Li-Po 4500 mAh ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে। যার সাহায্যে আপনি গড়ে 105 ঘন্টা স্ট্যান্ড বাই টাইম এবং 13.5 ঘন্টা নেট ব্রাউজিং পেতে পারেন। সম্পূর্ণ চার্জে, আপনি 3G-তে প্রায় 33 ঘন্টা পর্যন্ত কথা বলতে পারবেন। 30W দ্রুত চার্জিং সহ ফোনটি সম্পূর্ণ চার্জ হতে প্রায় 55 মিনিট সময় নেবে।

Realme Narzo 50i এর ২ জিবি র্যায়ের মূল্য রাখা হতে পারে ১০ হাজার টাকা। তবে এটা এখনো রিলিজ হয় নি।আশা করা হচ্ছে জুনের শেষে রিলিজ করা হবে।
ফোনটির কর্মক্ষমতা: Android 11 অপারেটিং সিস্টেম এবং Unisoc Tiger T612 (12 nm), Octa-core (2×1.8 GHz Cortex-A75 & 6×1.8 GHz Cortex-A55) প্রসেসর ফোনে।
RAM এবং ROM: কোম্পানি ফোনটি 2GB/32GB এবং 3GB/32GB ভেরিয়েন্টে লঞ্চ করেছে। গেমিং এর ক্ষেত্রে গ্রাফিক্স, র‍্যাম মোটামুটি ভালো। এইচডি-মানের গ্রাফিক্স গেমগুলি সহজেই চালানো যায় এবং বেশ মসৃণভাবে খেলা যায়।
ক্যামেরা: ফোনের পিছনে একটি 8MP ক্যামেরা রয়েছে যার সাহায্যে আপনি সুন্দর মানের ছবি এবং সর্বোচ্চ 1080p@30fps ভিডিও রেকর্ড করতে পারবেন। তদুপরি, এটি একটি অতিরিক্ত বৈশিষ্ট্য হিসাবে রয়ে গেছে ফোনটিতে একটি 5MP সেলফি ক্যামেরা রয়েছে যা দিয়ে আপনি সুন্দর মানের ছবি এবং সেলফি তুলতে পারবেন। আপনি সামনের ক্যামেরা দিয়ে সর্বাধিক 720p@30fps ভিডিও রেকর্ড করতে পারেন৷ ফোনের ক্যামেরা দিয়ে উচ্চ-মানের সেলফির কাজ অনায়াসে করা যায়।
ব্যাটারি: মোবাইলটিতে একটি অপসারণযোগ্য Li-Po 5000 mAh ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে। যার সাহায্যে আপনি গড়ে 131 ঘন্টা স্ট্যান্ডবাই টাইম এবং 15 ঘন্টা নেট ব্রাউজিং পেতে পারেন। সম্পূর্ণ চার্জে, আপনি 3G-তে প্রায় 35 ঘন্টা পর্যন্ত কথা বলতে পারবেন। 10W চার্জিং সহ ফোনটি সম্পূর্ণ চার্জ হতে প্রায় 2:30 ঘন্টা সময় নেবে৷

Vivo Y33e মোবাইলটির RAM এবং ROM:
কোম্পানি ফোনটি 4GB/128GB এর একক ভেরিয়েন্টে লঞ্চ করেছে। গেমিং এর ক্ষেত্রে গ্রাফিক্স, র‍্যাম মোটামুটি ভালো। এইচডি-মানের গ্রাফিক্স গেমগুলি সহজেই চালানো যায় এবং বেশ মসৃণভাবে খেলা যায়।
ক্যামেরা: ফোনের পিছনে একটি 13MP+2MP ক্যামেরা রয়েছে যার সাহায্যে আপনি সুন্দর মানের ছবি এবং সর্বোচ্চ 1080p@30fps ভিডিও রেকর্ড করতে পারবেন। তাছাড়া, এটি একটি অতিরিক্ত বৈশিষ্ট্য হিসাবে রয়ে গেছে ফোনটিতে একটি 8MP সেলফি ক্যামেরা রয়েছে যা দিয়ে আপনি সুন্দর মানের ছবি এবং সেলফি তুলতে পারবেন। আপনি সামনের ক্যামেরা দিয়ে সর্বাধিক 1080p@30fps ভিডিও রেকর্ড করতে পারেন৷ ফোনের ক্যামেরা দিয়ে উচ্চ-মানের সেলফির কাজ অনায়াসে করা যায়।
ব্যাটারি: মোবাইলটিতে একটি অপসারণযোগ্য Li-Po 5000 mAh ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে। যার সাহায্যে আপনি গড়ে 120 ঘন্টা স্ট্যান্ডবাই টাইম এবং 14 ঘন্টা নেট ব্রাউজিং পেতে পারেন। সম্পূর্ণ চার্জে, আপনি প্রায় 33 ঘন্টা পর্যন্ত কথা বলতে পারবেন। ফোনটি সম্পূর্ণ চার্জ হতে 10W চার্জিং সহ প্রায় 2:30 ঘন্টা সময় নেবে৷

ফোনটির ৪ জিবি র্যায় এবং ১২৮ জিবি রোমের মূল্যঃ ২০ টাকা ধারণা করা হচ্ছে। এটি বাংলাদেশ জুন মাসের শেষে লঞ্চ হতে পারে।

Tecno Camon ফোনটির Network system:
ফোনটি 2G, 3G, এবং 4G নেটওয়ার্ক সুবিধাগুলি সমর্থন করেছে। তাছাড়া GPRS এবং EDGE সুবিধাও রয়েছে। ফোনে HSPA 42.2/5.76 Mbps, LTE-A গতি।
কর্মক্ষমতা: ফোনে Android 12 অপারেটিং সিস্টেম এবং MediaTek Helio G85 (12nm), Octa-core (2×2.0 GHz Cortex-A75 & 6×1.8 GHz Cortex-A55) প্রসেসর। RAM এবং ROM: কোম্পানি ফোনটি 6GB/128GB এর একক ভেরিয়েন্টে লঞ্চ করেছে। গেমিং এর ক্ষেত্রে গ্রাফিক্স, র‍্যাম মোটামুটি ভালো। এইচডি-মানের গ্রাফিক্স গেমগুলি সহজেই চালানো যায় এবং বেশ মসৃণভাবে খেলা যায়।

ক্যামেরা: ফোনের পিছনে রয়েছে একটি 48MP+2MP+QVGA ক্যামেরা যার সাহায্যে আপনি সুন্দর মানের ছবি এবং সর্বোচ্চ 1080p@30fps ভিডিও রেকর্ড করতে পারবেন। অধিকন্তু, এটি একটি অতিরিক্ত বৈশিষ্ট্য হিসাবে রয়ে গেছে যেমন ফোনটিতে একটি 32MP সেলফি ক্যামেরা রয়েছে যা দিয়ে আপনি সুন্দর মানের ছবি এবং সেলফি তুলতে পারেন। আপনি সামনের ক্যামেরা দিয়ে সর্বাধিক 1080p@30fps ভিডিও রেকর্ড করতে পারেন৷ ফোনের ক্যামেরা দিয়ে উচ্চ-মানের সেলফির কাজ অনায়াসে করা যায়।
ব্যাটারি: মোবাইলটিতে একটি অপসারণযোগ্য Li-Po 5000 mAh ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে। যার সাহায্যে আপনি গড়ে 125 ঘন্টা স্ট্যান্ডবাই টাইম এবং 16 ঘন্টা নেট ব্রাউজিং পেতে পারেন। সম্পূর্ণ চার্জে, আপনি প্রায় 36 ঘন্টা পর্যন্ত কথা বলতে পারবেন। 18W ফাস্ট চার্জিং সহ ফোনটি সম্পূর্ণ চার্জ হতে প্রায় 2:00 ঘন্টা সময় নেবে।
৬জিবি + ১২৮ জিবি এর ফোনটির মূল্যঃ ১৮৪৯০ টাকা হতে পারে। এটি ৮ ই জুন চীনে রিলিজ হয়।
আজ তাহলে এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আশা করবো আরো উৎসাহ মূলক মন্তব্য করবেন।

The post ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে 5টি সেরা ফোনের রিভিউ appeared first on Trickbd.com.

Tamarind EX11 Pro সিরিজের ল্যাপটপ নিয়ে এলো ওয়ালটন

Posted:

টামারিন্ড সিরিজের নতুন ল্যাপটপ এনেছে ওয়ালটন। Tamarind EX11 Pro মূলত Tamarind EX10 Pro-এর আপডেট, যেখানে ইনটেলের দশম জেনারেশনের প্রসেসর থেকে একাদশ জেনারেশন প্রসেসরে উন্নীত করা হয়েছে, এবং হায়ার ফ্রিকুয়েন্সি (3200 MHz) র‌্যাম ও SATAIII এর পরিবর্তে NVMe SSD ব্যবহার করা হয়েছে।

Tamarind EX11 Pro সিরিজে তিনটি প্রসেসর ভ্যারিয়েন্ট মডেল রয়েছে- TAMARIND EX311G (i3-1115G4), TAMARIND EX511G (i5-1135G7) ও TAMARIND EX711G (i7-1165G7)।এদের মূল্য যথাক্রমে 58950 টাকা, 69550 টাকা ও 84550 টাকা। তবে বর্তমানে EX311G ও EX511G পাওয়া যাচ্ছে, EX711G এখনো আপকামিং।

ইতোপূর্বে আসা Tamarind MX11 সিরিজের মত অতটা প্রিমিয়াম নয় EX11 Pro সিরিজটি। চ্যাসিসে মেটালিক ফিনিশ থাকছে। 1.4 kg ওজন নিয়ে ল্যাপটপগুলো বেশ স্লিক এন্ড স্লিম। এর 14″ FHD LED ডিসপ্লেটির কালার গ্যামুট 45% NTSC হওয়াতে কালার কিছুটা ওয়াশডআউট দেখাবে, যা বিশেষ করে গ্রাফিক্স রিলেটেড কাজের ক্ষেত্রে আদর্শ নয়। এখানে থাকছে 1.0 MP HD ভিডিও ক্যামেরা।

একটি 8 GB DDR4 3200 MHz র‌্যাম স্টিক ইন্সটল্ড রয়েছে এবং আরেকটি খালি স্লট আছে। ২টি 2 W এর স্পিকার থাকছে। কীবোর্ডে ব্যাকলিট সমর্থন নেই, আলাদা নাম্বারপ্যাড নেই। ব্যাটারী 36 Wh ও চার্জার অ্যাডাপ্টর 45 W এর। HDMI, RJ-45 LAN ও Type C পোর্টসহ পোর্টসের দিক থেকে এটি পরিপূর্ণ। থাকছে মাইক্রোএসডি কার্ড স্লটও। WiFi 5.0 ও Bluetooth 5.1 সমর্থিত। ল্যাপটপগুলোর সাথে থাকছে জেনুইন উইন্ডোজ ১১।

ল্যাপটপটির দাম এর কনফিগারেশন অনুযায়ী কিছুটা বেশি মনে হয়েছে আমার কাছে। বিশেষত MX11 সিরিজ একচুয়ালি সিমিলার প্রাইসিংয়ে বেটার ডিসপ্লে, LED কীবোর্ড, আপডেটেড WiFi 6.0 ও Bluetooth 5.2, বড় ব্যাটারী ও ফাস্টার চার্জিংসহ এর তুলনায় বেটার ভ্যালু অফার করছে।

আরো জানতে: অফিসিয়াল ওয়েবপেজ

দেখতে পারেন- Helio 30: হেলিওর নতুন স্মার্টফোন এলো সবচেয়ে কম দামে 108 MP ক্যামেরাসহ চমকের সাথে

একটি নিয়নবাতি পরিবেশনা

 

The post Tamarind EX11 Pro সিরিজের ল্যাপটপ নিয়ে এলো ওয়ালটন appeared first on Trickbd.com.

X-Ray Pack দিয়ে X-Ray করে সহজেই Diamond মাইনিং করুন

Posted: 29 Jun 2022 03:12 AM PDT

যারা মাইনক্রাফট খেলেন তারা অবশ্যই জানেন 1.19 Wild Update এরপর থেকে Minecraft অনেক হার্ড হয়ে গেছে। Biome অনেক Deep হয়ে গেছে তাই মাইনিং করা কষ্টকর। যে Coordinate এ সব থেকে বেশি Diamond পাওয়া যায় ওই Coordinate এ মাঝে মাঝে ২ঘন্টা মাইন করেও ডায়মন্ড পাওয়া যায়না।
আর যেহেতু রিসেন্ট আপডেট তাই বাকি X-Ray Addon/Texture Pack গুলো ঠিকমত কাজ করেনা। তাই আপনাদের জন্য এই প্যাকটি, এটি মোবাইল এবং উইন্ডোজ দুটোতেই কাজ করবে।

pickedpicked

NAME: SERPX-RAY 1.0 
SUPPORT: 1.19 Bedrock

কিভাবে Install করবেন? 
প্রথমে নিচে লিংক থেকে ডাউনলোড করে নিবেন এরপর Open With Minecraft করবেন। এরপর Automatic Import হয়ে যাবে। নাহলে গেম অপেন অবস্থায় ফাইলটি আবারো Open with Minecraft করে দিবেন।

এরপর Settings-> Global recourses-> My packpack এখানে প্যাকটি দেখাবে ওটায় ক্লিক করে Active এ ক্লিক করে নিবেন তাহলে Xray চালু হয়ে যাবে। এরপ যেকোনো ওয়ার্ল্ডে খেলতে পারবেন যখন অফ করবেন তখন আগের সেটিং এ যেয়ে Deactivated করবেন।

Download linkClick




The post X-Ray Pack দিয়ে X-Ray করে সহজেই Diamond মাইনিং করুন appeared first on Trickbd.com.

Post a Comment

0 Comments